পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । চাহিয়৷ দেখি, দেখিতে পাই পরিচিতগণের মধ্যে প্রায় সকলেই অহস্থ ।" সিনক্লেয়ার ( Mr. upton sinclair) সাহেবের কথাটা সম্পূর্ণ সত্য নী হইলেও, আজকালের উচ্চ সভ্যতাভিমানী নরসমাজের দশভাগের নয়ভাগ যে যথার্থ সুস্থ নহেন সে বিষয়ে সনোহ নাই। বীল্যের সেই উদ্দাম চঞ্চল সবল স্বাস্থ্য আমরা যৌবনেই হারাইয়া ফেলি। যথার্থ যৌবনের পরিপূর্ণ বলদৃপ্ত স্বাস্থ্যের সহিত আমাদের সাক্ষাৎ ঘটেই না বলিলে চলে, পরিচয় ত’ দূরের কথা । এরূপ হইবার কারণ কি ? আজ দশ বৎসর ধরিয়া সিনৃক্লেয়ার সাহেব উtহার নিজের ও পরিচিতগণের অস্বাস্থ্যের কারণ অনুসন্ধান করিভেছিলেন । এতদিনে তিনি প্রকাশ করিয়াছেন যে তিনি এ অসুস্থতার কারণ ও প্রতীকার উভয়ই আবিষ্কার করিয়াছেন। তিনি নিজের সম্বন্ধে যতদূর পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, তাহাতে বুঝিয়াছেন যে “পোড়। পেট’-ই-যত অনিষ্টের মূল । কথাটা যে কেবল তাহারই সম্বন্ধে সত্য তাহী নহে—আমাদের অধিকাংশ অনুস্থতারই কারণ ঐ পোড়া পেট । ফুেচার নামে এক সাহেব (Mr. Horace Fletcher ) বহুদিন অজীর্ণ রোগে পীড়িত হইয়। স্বাস্থ সম্বন্ধে বহু পুস্তক প্রণয়ন করিয়া গিয়াছেন । তাংরি মতে সকলেরই খাদ্যকে এরূপ চিবাই য়। খাওয়া উচিত যে প্রত্যেক গ্রাস হইতে আমরা যথা সস্তব সারাংশ লাভ করিতে পারি, এবং প্রত্যেকের যথার্থ আবিস্তকের অধিক কোন মতেই আহার করা কর্তব্য নহে। এই নীতির অমুসরণ করিয়৷ লক্ষ লক্ষ লোক নীরোগ হইয়াছেন ও দীর্ঘ জীবন লাভ করিয়াছেন। ফুেচার সাহেবের নীতির অনুসরণ করিয়া সিনক্লেয়ার বিশেষ উপকার না পাইলেও, উক্ত উপদেশেই আহারের প্রতি তাছার প্রথম দৃষ্টি পড়ে। যাহা হউক এ উপায়ে তিনি বিশেষ কোন ফললাভ না করিয়া অধ্যাপক মেচলিব ফের পথ অনুসরণ করিলেন । মেচনিকফের মত কেবল শুষ্ক রুটি ও দধি বা খোল খাই থাকিলে আমরা সকলেই এক শত কুড়ি বৎসর পরমায়ু লাভ করিতে চয়ন—উপবাসের উপকারিত। 8$ ዓ‛ পারি। ইহা হইতে সিমৃক্লয়ার বুঝিলেন যে অজীর্ণ । খাদ্যংশ আমাদের অন্ত্রস্থলে থাকিয়৷ নানা - প্রকার বিষাক্ত বীজের উৎপত্তি সাধন করে, এবং সেইগুলি রক্তের সহিত মিশ্রিত হইয়া নান প্রকার রোগকে প্রসব করে । তিনি নিজে পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন যে তাহার বাহ্যিক সুস্থাবস্থাতে অস্ত্রস্থ পদার্থের এক আউদেব মধ্যে প্রায় ছয় কোটি বিষাক্ত বীজ রহিয়াছে , এবং একদিন অসুস্থ বোধ হওয়ায় দেখিলেন বীজাণু সংখ্যা প্রয় ১২০ কোটি হইয়াছে। নান। প্রকার ঔষধ সেবন ও বায়ু পরিবর্তন করিয়া তাহার সাময়িক উপকার হইল মাত্র, স্থায়ী ফল কিছুই হইল না। তিনি বুঝিলেন যে অধিক অtহার হইতেছে নিশ্চয়, বিস্তু ক্ষুধা নিবৃত্তি না হইলেই বা আtহার বন্ধ করেন কি করিয়া ? তবু তিনি অধিকাংশ লোকের অপেক্ষ আল্লাহারী ছিলেন। এইরূপ অবস্থায় দিন কাটিতেছে, এমন সময়ে একদিন এক মহিলার সহিত র্তাহার সাক্ষাৎ হইল—মহিলাটির উজ্জ্বলবর্ণ ও অসাধারণ স্বাস্থ্য দেখিয়া সকলেই তাহার প্রশংসা করে । তিনি সেই মহিলার ইতিহাস ংগ্ৰহ করিলেন । ইতিপূৰ্ব্বে দশ পনের বৎসর তিনি এত অসুস্থ ছিলেন যে প্রায়ই শয্যাগত থাকিতেন। উছার সন্তানাদি হইয়াছিল বটে এবং সংসার ধৰ্ম্মও করিতে হইত সত্য, কিন্তু দেহটি রোগের অtধার হইয়া উঠিয়াছিল । রক্তহীনতা, দৌৰ্ব্বল্য, ভয়ঙ্কর বাত ইত্যাদি পাচ সাতটি রোগ আসিয়া নিতান্ত আত্মীয় ভাবে তাহার অtশ্রয় লইয়াছিল। এইরূপ অবস্থায় একদিন ঘোড়ায় চড়িয়া ভয়ঙ্কর ঝড় দুর্য্যোগের রাত্রে পাৰ্ব্বত্য প্রদেশের উপর দিয়া উহাকে আটাশ মাইল যাইতে হয়। ইহার পূর্ব চারি দিন তিনি সম্পূর্ণ উপবাসী ছিলেন । এই উপবাসের ও শ্রমের ফলে তিনি দেখিলেন উiহার সকল রোগ সহসা পলাইয় গেল । এই বৃত্তান্ত শুনিয়া সিনক্লেয়ার নিজে উপবাস করিয়া পরীক্ষা করিলেন। প্রথম দিন ভয়ঙ্কর ক্ষুধা বোধ হইল—অঙ্গীর্ণ রোগীদের যে একটা রাফুসে বৃথা ক্ষুধা হয় ইহা অনেকটা সেই রকম। দ্বিতীয়