পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । চয়ন—বিবিধ । । 8२१ বিবিধ । প্রাচীন জগতে ভারতের প্রভাব । কিছুকাল পূৰ্ব্বে লেককু ( Lecoq ) নামে এক ব্যক্তি মধ্য আসিয়ার তারফান ( Tarfan ) নগরে কতকগুলি সংস্কৃত পুথি আবিষ্কৃত করেন। সেদিন এক জৰ্ম্মাণ পণ্ডিত ( Herr Lueden ) নাকি সেগুলির অর্থ ব্যাখ্যা করিয়া দেখিয়াছেন, সেগুলি কয়েকখানি প্রাচীন সংস্কৃত নাটকের নির্বাচিত দৃন্থের অনুলিপি । এই সকল নাটকের এক এক খানি ২৫০০ বৎসরেরও অধিক প্রাচীন । কিন্তু ইহাতে আমাদের আশ্চর্যাম্বিত হইবার কিছুই নাই। ভারতের সভ্যত যে ২৫০০ বৎসরেরও পূর্বে উন্নতির চরম সীমায় উপনীত হইয়াছিল, তাহার ভুরি ভুরি প্রমাণ আমরা পাইবা থাকি । তবে এই আবিষ্কারের দ্বার প্রমাণিত হইতেছে যে, সেই প্রাচীন যুগের হিন্দু সভ্যতা ও শিক্ষার প্রভাব কেবল ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, আসিয়া মহাদেশের সকল স্থানেই তাহ ব্যাপ্ত হইয় পড়িয়াছিল । আমরা আজ সেই হিন্দুদন্তান, এ কথা মনে করিলেও চক্ষে জল আসে । হিন্দুর শাস্ত্র ও সামাজিক সংস্কার । আধুনিক হিন্দু রীতিনীতি সম্বন্ধে শাস্ত্রের মতামত জানিবার জন্য কিছুদিন হইল বরোদার মহারাজ। মহীশূরের প্রসিদ্ধ পণ্ডিত মহাদেব শাস্ত্রীকে স্বরাজ্যে আহবান করেন । আজকাল ভারতে তাহার হ্যtয় সংস্কৃতশাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত বিরল । বহু অনুসন্ধানের পর তিনি স্থির করিয়াছেন, আমাদের বর্তমান সমাজে শাস্ত্রের দোহাই দিয়া যে সকল বিধি ব্যবস্থা প্রচলিত অাছে, তাহার অধিকাংশই শাস্ত্রীসুমোদিত मt३ ! বেদ এবং অন্তান্ত শাস্ত্র হইতে তিনি প্রতিপন্ন করিয়াছেন যে, পুরুষ বা নারী, ধনী বা দরিদ্র বা শূদ্ৰ সকলেরই আপনাদের নৈতিক, শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি করিবার তুল্য অধিকার আছে । আজকালের জাতিভেদের কঠিন নিগড় সমাজের এ অধঃপতিত অবস্থারই উপযুক্ত,--শ্রুতিতে তাহার কোন উল্লেখই নাই । আমাদের দেশের সংস্কারবিরোধীর দল বৰ্ত্তমান ছনীতিগুলির সমর্থনকালে সদা সৰ্ব্বদা শাস্ত্রের দোহাই দিয়া থাকেন। মহাদেব শাস্ত্রী সেই শাস্ত্র হইতেই প্রমাণ করিতেছেন যে, সেগুলি যে কেবল শাস্ত্রানু, মোদিত নহে তাহা নহে-অধিকন্তু সম্পূর্ণ শাস্ত্র বিরুদ্ধ। У о শাস্ত্র হইতেই তিনি প্রতিপন্ন করিতেছেন : আমরা সকলেই একজাতির অন্তর্গত, অর্থাৎ আমরা সকলেই ব্রাহ্মণ । একদিন আমরা সকলেই ব্রাহ্মণ ছিলাম । কালে দিন দিন আমরা বেদের উচ্চ আদর্শ যতই বিস্তুত হইতে লাগিলাম, ততই ক্রমে বিভক্ত হইয়া বর্তমান অসংখ্য জাতির দ্বারা বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িলাম। বিভিন্ন উপজীবিকার ফলেই এইরূপ ঘটিল। আজকাল আমরা এক পরিবারের পীচ জন যেরূপ বিভিন্ন প্রকার উপজীবিক অবলম্বন করিয়া থাকি, সেকালেও আর্য্যগণের মধ্যে তাহাই ঘটিত । এই কৰ্ম্মস্বাতস্ত্র্যের ফলে ক্রমে তাহীদের পরস্পরের বিভেদ ঘটিল ! প্রথম প্রথম এই বিচ্ছেদের ফলে কোনও মনুষ্য অনন্তকালের জন্য অtপল পদেয় উন্নতি বিধানে অক্ষম বলিয়া গণ্য হইত না । ক্রমে আমাদের স্বর্থ ও সংকীর্ণতা শূদ্র ও শুদ্রবেী দলের স্বষ্টি করিল। তৎসত্ত্বেও সেকালে নিষ্ঠাবান ও শুদ্ধাত্মা ব্রাহ্মণের শূদ্রের দ্বার প্রস্তত খাদ্য ভক্ষণ করিতেন—এমন কি সে খাদ্য দেবকৰ্ম্মে পৰ্য্যন্ত ব্যবহৃন্ত হইত। প্রকৃত পক্ষে তৎকালে রন্ধন ও অন্তান্ত গৃহকৰ্ম্ম শূদ্রের দ্বারাই সম্পন্ন হইত। উত্তরকালে এ সকল কৰ্ম্ম যখন শূদ্রের পক্ষে নিষিদ্ধ হইল, তাহীদের কৰ্ম্মভার নারীদের স্কন্ধে আসিয়া