পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা । সহস্ৰ চুড়া আকাশ ভেদ করিয়া উঠিত,–এবং সন্ধ্যা সমাগমে যখন সেই সপ্তসহস্ৰ দেবপীঠের অসংখ্য অৰ্চকগণের ভক্তিবিহবল কণ্ঠ হইতে ভগবানের অনাহত উদাত্ত মহিমাগাথ উচ্ছসিত হইয়া উঠিত,মন্দিরের অযুতদীপমালার উজ্জলআলোক যখন বিন্দু সাগরের অমল জলের সহিত তালে তালে নাচিতে থাকিত, তখন স্বর্গের সৌন্দৰ্য্যও বুঝি মান হইয়। যাইত । আজ আর সে দিন নাই। এখন কয়েক পোষ্যপুত্র। 8te শত মাত্র মন্দির আছে, তাহাও পতনোন্মুখ,— ংস,-ভগ্ন ! এখন কেবল যেন একটা অটল গাম্ভীৰ্য্য বিপুলবেদনাভার বক্ষে চাপিয়া এই পুণ্য ভূমিতে স্তম্ভিত হইয়া বসিয়া আছে! আর তাহার চারিদিকে, শুমায়িত বনস্পতির শাখায় শাখtয় উন্মাদ পবনের রোদন-মাখ বেহাগ-তান যেন অস্তরের স্মৃতি-কাতর মেীন ভাষার সহিত করুণ সুর জুড়িয়া দিতেছে। ঐহেমেন্দ্রকুমার রায়। পোষ্যপুত্র। বাড়িখানির দরজার উপরে পাথরের উপর সোনালি অক্ষরে বড় বড় করিয়া লেখা মাছে আশ্রম । অtশ্রমের পশ্চাতে বাগানের শেষভাগে পেয়ার ও লিচু গাছের মধ্য দিয়া একটি ছোট কুটির দেখা ষাইতেছিল,—সেই কুটিরে ছেলেদের কথিত স্বামীজি আসিয়া বাস করেন। মাটির দাওয়ায় মৃগচৰ্ম্মে উপবিষ্ট সন্ন্যাসীর নিকট কম্বলের আসনে শিয্য বসিয়া আছেন ! বাশের খুটি জড়াইয়া তরুলতা ও ঝুমকাফুল খোলার চালের উপর পর্য্যন্ত ছাইয়া রহিয়াছে, মাটির দেওয়াল আইভি জড়িত হইয়া ছবিথানির মতন দেখাইতেছিল। ঘরের দরজাটি ভেজান আছে ; ভিতরে মুমার্জিত পিত্তলের কমণ্ডলু, একটি ধুনাচি ও পিত্তল পিলমুজের উপর একটি প্রদীপ ভিন্ন একখানি কম্বলের শয্যা মাত্র উপকরণ । শীতের স্বল্পায়ু স্বৰ্য্যকিরণ সেই শাখানিবিড় বৃক্ষান্তরাল দিয়া সাদরে গুরুশিষ্যের অঙ্গ বেষ্টন করিয়াছিল। চারিদিকের ○> গাছগুলায় বুলবুল পাপিয়া চড়াই প্রভৃতি পাখীরা আনন্দ কলরবে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল। একটি চক্রবাকমিথুন নদীতীরে তাহদের সারারজনীর আগত প্রায় বিচ্ছেদাশঙ্কায় মৌনবিষাদে মুখামুখি বসিয়া আছে। মাছরাঙ্গা ও বকগুলা শিকারের চেষ্টায় তখনও জলের মধ্যে পা ডুবাইয়া উৎসুক নেত্রে ঘুরিতেছে। কৰ্ম্মক্ষেত্র সংসারের প্রত্যেক ক্ষুদ্র বৃহৎ প্রাণীটি প্রতিনিয়ত তাহীদের কৰ্ম্মকেন্দ্রের চারি পাশে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, কেহই কৰ্ম্মহীন নয়। শিষ্য কিছুক্ষণ সেই সমস্ত চাহিয়া চাহিয়া দেখিল ; তার পর দৃষ্টি স্থির করিয়া কহিল “তবে কি আপনি কৰ্ম্মযোগকেই প্রধান যোগ ও গৃহস্থাশ্রমকে প্রধান আশ্রম বলেই মনে করেন ?” গুরু কহিলেন “আমার এই প্রকার ধারণ ।” “মার্জনা করবেন, তবে সে আশ্রম ত্যাগ করে আপনি কেন এপথে এসেছেন ?” সন্ন্যাসী একটু হাসিলেন, বলিলেন,"ঈশ্বরের