পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা। শুভদৃষ্টি। 8లిసె শুভদৃষ্টি। আমার স্বহস্ত-রোপিত মাধবীলতিকায় আজ প্রথম পুষ্পকলিকা দেখা দিয়াছে । আনন্দের আতিশয্যে দাদা মহাশয়কে খবরটা দিবার জন্ত তাহার কক্ষদ্বীরে আসিয়া ডাকিলাম, “দানা মহাশয়”—জবাব পাইলাম না ! পৰ্বদ ঈষৎ সরাইয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া দেখিলাম, দাদ। মহাশয় পিতৃদেবের সহিত ধীরে ধীরে কি কথা বলিতেছেন । আমি আবার ডাকিলাম "দাদা মহাশয়,”–এবারও কোন উত্তর পাইলাম না ! বুড়ার উপর ভারি চটিয়া গেলাম। শুনিয়াছিলাম, আসলের চেয়ে স্বদের উপর লোকের মায়া বেশী ! এ বুড়ার দেখিলাম, সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাব ! পিতামহ আপদে বিপদে লোককে টাকা ধার দিতেন বটে, কিন্তু কোন দিন র্তাহাকে সুদ নিতে দেখি নাই ;–তাই বোধ হয়, মুদ কি ‘চিজ, তাহা তিনি চিনিতে পারেন নাই ! এমন সময় সেই কক্ষ মধ্যে এক অপরিচিত পুরুষ প্রবেশ করলেন । ত্রস্ত ভাবে পিত ও পিতামহ উভয়েই দণ্ডায়মান হইলেন। পিতামহ বলিলেন “আসতে আঞ্জে হোক, আমরা মহাশয়ের কথাই বলিতেছিলাম।” যিনি প্রবেশ করিলেন, তাহার চেহারাট দেখিবার মত বটে ! সেই দীর্ঘ আর্য্যচ্ছন্দের মুখমণ্ডল, প্রশস্ত ললাটদেশ ; উন্নত নাসিক, বিশাল চক্ষুদ্বয়, সৰ্ব্বোপরি সেই স্বগেীর সুদীর্ঘ বপু, প্রথম দৃষ্টিতেই শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে ! পিতা ও পিতামহ সীষ্টাঙ্গে প্রণাম করিয়া আমাকে বলিলেন, “শিশির, প্রণাম কর, ইনি বিখ্যাত জ্যোতিষী রঘুদেব শাস্ত্রী !” আমি মুগ্ধ নয়নে সেই বিরাটমূৰ্ত্তি দর্শন করিতেছিলাম, পিতামহের সম্বোধনে চমক ভাঙিল ; অগ্রসর হইয়া প্রণাম করিলাম। যখন উঠিয়া সোজা হইয়া জ্যোতিষীর সন্মুখে দাড়াইলাম, তখন দেখিলাম, তিনি একদৃষ্টে চাহিয়া রহিয়াছেন। মিনিটকাল পরে তিনি ঈষৎ হাস্ত করিলেন । পিতামহ উৎসুকভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি দেখিতেছেন ?” “পরে বলিতেছি, কিছু রক্তচন্দন অথবা অলক্তক আনিতে বলুন দেখি ” চন্দন আনীত হইল। শাস্ত্রী আমাকে বললেন, “হস্তে লেপন কর’— আমি জিজ্ঞাসা করিলাম “কেন ?” “রেখাগুলি মুস্পষ্ঠ বুঝ। যাইবে ; উহাতে গণনার পক্ষে সুবিধা হইবে।” অামি আমার চন্দনসিক্ত হস্ত শাস্ত্রী মহাশয়ের নিকট অগ্রসর করিয়া দিলাম । প্রায় এক ঘণ্টা কাল ধরিয়া তিনি বিশেষ রূপে প্রত্যেক কররেখা পৰ্য্যবেক্ষণ করিলেন। ললাটদেশ, মস্তকের স্থান বিশেষ ও চক্ষুদ্বয় পরীক্ষা করিলেন । গণনায় অন্তান্ত ফলের মধ্যে বলিলেন, “যতদূর বুঝতেছি, এই বালকের পরিণয় অসম্ভব ; যাহার সহিত এই বালকের যথার্থ শুভদৃষ্টি হইবে—অর্থাৎ যে কষ্টার চক্ষু দেখিয়া মোহিত হইবে, যদি সেই কস্তার সহিত ইহার বিবাহ হয়, তবেই বিবাহ সম্ভব ও মঙ্গলজনক, নতুবা নহে ।” - o পিতামহ দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন;--