পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ե օ চেষ্টা করিয়াছেন । এখনো এ চেষ্টার একান্ত বিরাম হয় নাই । এইরূপে, ভারতের সমাজে স্ত্রীপুরুষেব সামাজিক মেল-মেশার যে কতকটা অন্তরায় আছে, ইহাকে স্ত্রীচরিত্র-গঠনের অস্তুরায় ভালিয়া, নিজেদের সামাজিক রীতিনীতিকে কতকটা বিলাতি ছাচে ঢালিবার চেষ্টা করিতেছেন। এখনো অমরা সমাজ সংস্কারের নামে বিলাতের আদশে ভারতবর্ষকে নূতন করিয়া গড়িবার চেষ্টা হইতে বিরত হই নাই। কিন্তু এ মোহ ও ক্রমে কাটিতেছে । আমরা যেমন আছি, তেমনটিই যে থাকিব, এমন কথা কোনো বুদ্ধিমান লোকে এখন আর বলিবেন না । দুই বা পাচ হাজার বৎসর পূৰ্ব্বে যেমন ছিলাম, আবার তেমনটিই হইব, এ কল্পনাও কোনো লিচক্ষণ লোকের মনে স্থান পায় না । জগংবিবর্তনে চিরদিন সমভাবে থাক। যেমন একে বারে অসম্ভব, যে অবস্থা অনেক পশ্চাতে ফেলিয়া আসিয়াছি, তাহতে প্রত্যাবর্তন করাও তেমনি অসাধ্য। বেদ পড়িলেই বৈদিকযুগে ফিরিয়া যাওয়া যায় না । উপনিষদের সময়ে হিন্দুর সমাজবিবর্তনের যে ধাপ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, সেখানে ফিরিয়া যাওয়া যায় না। কল্যকার উপনিষদের অধ্যয়ন বা অধ্যাপনা হইতেই কৃত কৰ্ম্মকে আজ যেমন ডাকিয়া আনিতে পারি না,—তাহার ফলমাত্র ভোগ করিতে পারি, সেইরূপ জাতীয় জীবনের অতীতকালকেও চেঁচামেচি করিয়া, বা টিকি ধরিয়া টানিয়া আনা যায় না, তার কৰ্ম্মফলমাত্র ভোগ করা যায়। উপযোগী চেষ্টা দ্বারা সে কৰ্ম্মফলকে সংশোধন করা যাই তে পারে, অন্ত কৰ্ম্ম স্থার। তাছাকে নিরস্ত করাও ভারতী। আশ্বিন, ১৩১৭ সাধ্যায়ত্ত হইতে পারে, কিন্তু গত কৰ্ম্মকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নহে। সেকালের মানুষ লইয়াই সেকাল কাজ করিয়াছে, আর একাল ও সেকালের মামুষের মধ্যে যখন এতটাই প্রত্যক্ষ প্রভেদ দাড়াইয়া গিয়াছে, তখন এই নুগুন মানুষ লইয়া সে প্রাচীন সাধনাকে ফিরাইয়া আন কি সম্ভব ? কি স্তু এ সকল সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করিয়াও, বিদেশী ছাচে স্বদেশকে ঢালিধার উৎকট উদ্যোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করা বাইতে পারে । নুতন যুগে ভারতবর্ষ নূতন আকার ধারণ করিবে, এ কথা মানি । কিন্তু এ আকার যে বিলা ঠী আকার হইলে, বা হওয়া কোনো রূপে পাঞ্ছনীয়, এ কথ। মানিতে রাজি নহি । ভারতে যা আছে, তাই থাকুক, এ কথা বলি না। বলিলে ও দুরন্ত কাল সে কথা শুনিবে না । যা আছে, তাহ থাকিবে না। যা যেমন আছে, তাহা সেরূপ থাকিতে পারে না । তাহা বাঞ্ছনীয়ও নহে। পরিবর্তন আনিবাৰ্য্য। পরিবর্তন অবশম্ভাবী। কিন্তু একরূপ পরিবর্তন মৃত্যুকে ডাকিয়া আনে, অপরবিধ পরিবর্তন জীবনকে ফুটাইয়া তোলে । যে পরিবর্তনে নিজত্ব লোপ পায়, তাই মৃত্যুর পথ , যে পরিবর্তণে নিজত্বকে ব্যক্ত করে, দৃঢ় করে, বিস্তৃত করে, পরিণত কবে,– সেই পরিবর্তনই জীবনের পথ । ধৰ্ম্মে যেমন ভারতবর্ষ ক্রমশঃ আপনার নিজস্বটুকু আঁকড়াইয়া ধরিতেছে, সমাজগঠনে, রাষ্ট্রনীতিতে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে শিল্প-সাহিত্যে,—সমাজ-জীবনের প্রত্যেক অঙ্গে ও সকল বিভাগে সেইরূপে নিজত্বটুকুকে অঁাকড়াইয়া ধরিতে হইবে । এ বিষয়ে