পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8切ゲ একটা অসম্ভব ব্যাপার নহে। সেইজন্ত যুরোপে আজ যে হীন একদিন সে বা তাহার বংশধর আবার উচ্চ বা মহৎ হইবার আশা করিতে পারে, হইয়াও থাকে। কিন্তু আমাদের বর্তমান বর্ণভেদও কি তাই ? আমাদের মধ্যে যে নীচ তাহার পক্ষে কি কোন দিন উচ্চ হওয়া সম্ভব ? সে কি অনস্তকাল নীচ থাকিতেই বাধ্য নহে ? মামুষ মানুষকে—এমন কি তাহার ছায়াটিকে পর্য্যস্ত স্পর্শ করিতে ঘৃণা বোধ করে, ঘরে ঢুকিলে তাহার সংস্পর্শে জড়বস্তুটি পর্য্যস্ত অপবিত্র হইল বলিয়া মনে করে, ইহা অপেক্ষা মন্থন্তুত্বের অবমাননা যে অধিক কি হইতে পারে তাহা আমরা কল্পনা করিতেও অক্ষম। কোটি কোটি মনুষ্যকে—তাহাদের মুণ্ড মনুষ্যত্বকে ফুটাইয়৷ ভুলিবার উপযুক্ত শিক্ষা, সুযোগ ও সঙ্গ হইতে বঞ্চিত রাখাই ত’ মনুষ্যত্বের চরম অবমাননা ! এ নিষ্ঠুর নীতিকে সমর্থন করা যে কি প্রকারে সম্ভব, তাহা আমরা বুঝিতে অক্ষম। আর একটা কথার উল্লেখ করিয়াই অমর শেষ করিব। বিপিনবাবুর মতে “স্বচারুরূপে অমুষ্ঠিত পরধৰ্ম্ম অপেক্ষা বিগুণ স্বধৰ্ম্মও শ্রেষ্ঠ।” কিন্তু স্বধৰ্ম্ম বিগু৭ হইলেই ত’ সে অধৰ্ম্মের তুল্য হইল। যাহা আমার গুণকে প্রকাশ করে, পিকাশ করে, মুন্দর ও সার্থক করে, তাহাই আমার স্বধৰ্ম্ম । এসকলের অন্তরায় ঘটিলে বুঝিতে হইবে আমি আমার স্বধৰ্ম্ম হীরাইয়াছি,—অধৰ্ম্মের অধীন হইয়াছি । তখনও “স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্ৰেয়” বলিয়া চক্ষু বুজিয়া বসিয়া থাকাই কি বাঞ্ছনীয় ? পৃথিবীর মধ্যে থাকিয় পরকে বাদ দিলে চলিবে না। পরেরও স্বয়ের ভারতী । আশ্বিন, ১৩১৭ মধ্যে অনন্তকাল ধরিয়া অবিরাম অাদান প্রধান চলিতেছে—এই নিয়মের ফলেই তুমি আমি ! এখানে তোমাকে বাদ দিলে আমি কোথায়, আমাকে বাদ দিলে তুমি কোথায় ? বিপিনবাবুর কথাটার অর্থ আমরা বুঝিলাম না । আমাদের উপরের কথায় যেন কেহ মনে না করেন ষে আমরা সাহেবিয়ানারই সমর্থন করিতেছি। সাহেবিয়ান জিনিষটা একটা মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি তাহ আমরা স্বীকার করি । কিন্তু সেই সঙ্গে ইহা ও বলি যে আর্য্যামি জিনিষটাও আমাদের পক্ষে অল্প ভয়ঙ্কর ব্যাধি নহে । সকল দিক হইতেই গোড়ামি আমাদের উন্নতির পথের বিষম অন্তরায়। কালের উপযোগী করিয়া আপনাকে গড়িবার সমাজের যে একটি স্বাভাবিক প্রবণতা আছে তাছাতে বাধা দিলে সমাজশক্তি স্বাস্থ্য ও কাৰ্য্যকারিত। হারাইয়া নিতান্ত ব্যর্থ হইয় পড়ে,— বদ্ধজলের মতই তখন তাহ নানা রোগের আকর স্বরূপ হইয় দাড়ায় । সাহেব হওয়া আর সাহেবি-আন। যেমন এক নহে আৰ্য্য হওয়া আর আর্য্যামি করা ও তেমনি কোনমতেই এক নহে। সাহেবিয়ানাও যেরূপ প্রাণহীন, কপট, আত্মপ্রবঞ্চন, আর্য্যামিও সেইরূপ অন্ধ, আত্মক্ষয়ঙ্কর আত্মপ্রবঞ্চনা। এ বিষয়ে পূজ্যপাদ প্রযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৯৭ সালের ভাদের ভারতীতে “আৰ্য্যামি ও সাহেবিয়ান” প্রবন্ধে যাহা লিখিয়াছিলেন, পাঠকগণকে তাহ পাঠ করিতে অনুরোধ করি। র্তাহার বক্তব্যের উপর নুতন করিয়া বলিবার আর কিছুই নাই !