পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা । উদ্বেল হইয়া উঠিতেছে, চোথে তার বিন্দুমাত্র আভাস নাই, শুধু আত্মসমর্পণ এবং সম্মিলিত চেষ্টার অসম্ভাবিত নিষ্ফলতার । নিবিড় ছায়া কাহারে বা মুখে অঙ্কিত ! পাহারায় নিযুক্ত সৈন্তেরাও তাহাদের নিৰ্ম্মম শত্রুদিগের এই নিৰ্ব্বাক শোকাভিনয়ে মেীন-করুণ শ্রদ্ধামিশ্রিত সহানুভূতি প্রকাশ না করিয়া থাকিতে পারিতেছে না। ভিক্টরের আগমনে একটা ব্যগ্র কৌতুহলে সকলের চক্ষু বিস্ফারিত হইয়া উঠিল । সৈন্তদিগকে বন্দীদের বন্ধন মোচন করিতে সে আদেশ দিল এবং স্বয়ং গিয়৷ ক্লেরাকে বন্ধনমুক্ত করিল। অধরপুটে একটি সুকরুণ মৃদ্ধ হাসি ফুটাইয়। ক্লের বলিল, “তুমি কৃতকাৰ্য্য হয়েছিলে ?” তাহার চোখে তখনে বল্যের সরল মধুরমা বিরাজ করিতেছিল। অলক্ষিতে ভিক্টরের দীর্ঘনিশ্বাস বায়ুতে মিলাইয়া গেল। সকাতর দৃষ্টিতে সে একবার ক্লের এবং তাহার তিনটি ভাইয়ের দিকে চাহিল । বড় ভাইটির বয়স ত্রিশ,—খৰ্ব্বাকৃতি, তার দৃষ্টি গৰ্ব্ব এবং ঔদ্ধত্যে পূর্ণ, কিন্তু সমস্ত দেহভঙ্গিতে একটা উন্নত আভিজাত্যের গৌরব ফুটিয়া বাহির হইতেছে এবং যে স্বক্ষ কোমল পরদুঃখ কাতর হৃদয়ভাব অন্তএ স্পেনদেশের নাইট সম্প্রদায়ের বীরত্বগৰ্ব্বে দেশ বিদেশে যশোমণ্ডিত করিয়া রাখিয়াছে, জুয়ানিটোতে তাহারে অভাব বোধ হইল না । দ্বিতীয় ভাইটির নাম ফেলিপি ; বয়স বিশ, দেখিতে ক্লেরার মত । সবার ছোট ম্যামুয়েলের বয়স আট, তাহার মুখভঙ্গিতে একটা সুগভীর দৃঢ়তার ভাব অঙ্কিত। বৃদ্ধ মাকুয়েসের উন্নত দেহ পলিত কেশ । জেনারেলের প্রস্তাব যে তাহারা কখনে চয়ন-জীবন-দণ্ড । 4) నా মানিয়া লইবে,এমন আশ। ভিক্টর হৃদয়ে পোষণ করিতে পারিল না। তথাপি ক্লেরার নিকট সে ধীরে ধীরে প্রস্তাবটি পাড়িয়া ফেলিল। প্রথমট ক্লেরা বিস্ময়-চমকে র্কাপিয়া উঠিল ; শেষে স্বাভাবিক শান্তভাবে পিতার কাছে গিয়া ইটু গড়িয়া সে বলিল, “পিতা, জুয়ানিটোকে এই কাজ করতে বাধ্য করাও,তাতে আমাদের মঙ্গল হবে।” মাকুয়েস-পত্নী ক্লেরার মৰ্ম্মাস্তিক প্রস্তাব শুনিয়া মুর্ভূিত হইলেন। জুয়ানিটো পিঞ্জরাবদ্ধ সিংহের মত সহসা লাফাইল্প উঠিল । ভিক্টর তখন সৈন্ত গণকে সরিয়া যাইতে বলিল। যখন ভিক্টর ছাড়া সেখানে অন্ত লোক আর কেহ রহিল না, তখন মার্কয়ে ডাকিলেন, গম্ভীর কণ্ঠে "জুয়ানিটাে ” মাথা নাড়িয়া অস্বীকার করা ব্যতীত জুয়ানিটো কথায় কোনো উত্তর দিল না । ক্লের নিকট গিয় তাহার হাটুর উপর বসিল, এবং বাহুদ্বারা জুয়ানিটোর কণ্ঠ বেষ্টন করিয়া তাহার আঁখির পাতায় চুম্বন করিল। মৃদু হাসিয়া ক্লেরা বলিল, “জুয়ানিটে, ভাই, তুমি যদি শুধু জানতে, তোমার হাতে মরণ আমাদের কত মুখের, তা হলে জহলাদের হাতের স্পর্শ হতে এখনি রক্ষা করবে। আমাদের জন্ত যত দুঃখ সঞ্চিত আছে, সে সব হতে তুমিই আজ মুক্তি দিতে পার—অষ্ঠের হাতের লাঞ্ছন। তুমি দেখতে পারবে না, জানি, তবে—” কথা শেষ না করিয়া জুয়ানিটোর হৃদয়ে ফরাসীবিদ্বেষ জাগাইয়া দিবার জন্তই ক্লের তীব্র দৃষ্টিতে একবার ভিক্টরের দিকে চা হল। ফেলিপি বলিল, “ভয় কিসের ? ভেবে