পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা। “অশ্রীকণা’-রচয়িত্রী । ●ミ○ “অশ্রুকণা’-রচয়িত্রী। শ্ৰীমতী গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী । প্রায় পয়ত্রিশ বংসর পূৰ্ব্বে যখন এক বঙ্গীয়া বালিকা কবির রচিত "কবিতাহীর’ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়, তখন বাঙ্গালার সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র ‘বঙ্গদর্শনে’ ( ১২৮৯ জ্যৈষ্ঠ ) তাহার সমালোচনাপ্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন, “ইহার অনেক স্থান এমন যে তাহ কোন প্রকারেই অল্পবয়স্ক বালিকার রচনা বলিয়া বিশ্বাস করা যায় না।” সুদূর শৈশবে যে প্রতিভার স্ফুরণমাত্র দেখিয়া সাহিত্য-সম্রাট মুগ্ধ হইয়াছিলেন, আজ তাহ বিকশিত হইয়া বাঙ্গালার কাব্য-সাহিত্য অপুৰ্ব্ব কিরণে উদ্ভাসিত করিয়াছে। এই প্রতিভাশালিনী কবি, শ্ৰীমতী গিরীন্দ্রমোহিনী। গিরীন্দ্রমোহিনী-রচিত ‘অশ্ৰুকণা’, ‘অভিাষ” “অর্ঘ্য’, ‘শিখা’ ‘সিন্ধুগাথা’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থচলি ভাবসম্পদ ও স লীল সহজ অভিব্যক্তির গুণে মনোরম। এগুলি পাঠ না করিলে, কাব্য-পাঠ অসম্পূর্ণ রহিয়া যায়। গীতিকবিতার আধুনিক যুগে অনুকরণের ধূম লাগিয়া গিয়াছে। পুরুষ ও মহিলা কবির কাব্যে নুতন ভাবের পরিচয়-লাভ যে দুর্ঘট হইয়া উঠিয়াছে, সে কথা সত্য এবং আজ এমন দিনও আসিয়াছে, যখন মহিলারচিত বলিয়াই নিরপেক্ষ সমালোচনার স্থাত হইতে সাহিত্য অব্যাহতি পাইবে না। সে আপনার পাওনা-গগু কড়াক্রান্তিতে বুঝিয়া তবে আজ লেখক-লেখিকাগণকে আপন প্রবেশদ্বারেছাড় পত্র দিবে ! কঠোর এবং সুষ্ম পৰ্য্যালোচনায় গিরীন্দ্রমোহিনীর কাব্যগুলি যে বঙ্গীয় S \, সমালোচকের মতে বিশিষ্ট উচ্চাসন লাভ করিবে, সে বিষয়ে সংশয় নাই । অতি শৈশব হইতেই কাব্যের প্রক্তি গিরীন্দ্রমোহিনীর সবিশেষ অনুরাগ লক্ষিত হইয়াছিল। ৰে বয়সে বালিকার ‘পুতুলখেলা’ ও কলহাদি লইয়া মাতিয়া থাকে, সেই সময় বাণীদেবী তাহার গোপন ইন্দ্রজালে বালিকাকে মুগ্ধ করিয়াছিলেন। ‘গণেশবন্দনা’ লিখিয়া গিরীন্দ্রমোহিনী প্রথম কাব্য-সাহিত্যে হাতে খড়ি’ করেন । সে সকল শৈশব রচনা কালের প্রভাবে ‘অজানা’লোকে প্রয়াণ করিয়াছে, কিন্তু সে যে স্বচনার আভাষ দিয়া গিয়াছে, তাহার শুভ পরিণতি আজ স্পষ্টতা লাভ করিয়া বাঙ্গালীর অন্তরের সামগ্ৰী হইয়া উঠিয়াছে ! শৈশবেই গিরীন্দ্রমোহিনী-রচিত “ভারতকুসুম” ও “কবিতাহার” প্রকাশিত হয়। গ্রন্থে কবির নাম ছিল না । 'জনৈক হিন্দু মহিলা’ লিখিত—বলিয়া প্রকাশিত হইয়াছিল। কবিতাহীর পীঠে সুপ্রসিদ্ধ নাট্যকার ৮দীনবন্ধু মিত্র মহাশয় এতদূর প্রীতিলাভ করিয়াছিলেন যে, তিনি কবিকে তদরচিত অমূল্য নাটকাবলী উপহার দিয়াছিলেন। তদ্ভিন্ন নানা ইংরাজী পত্রিকাতেও গ্রন্থের সুখ্যাতি পাঠ করিয়া নারীজাতির পরম : হিগুৈষিণী মেরি কাপেণ্টার মহোদয় গিরীন্দ্রমোহিনীর সহিত সাক্ষাতের অভিলাষিণী হয়েন, কিন্তু নানাকারণে উভয়ের সাক্ষাৎকার ঘটিয় উঠে নাই ! তারপর, গিরীন্দ্রমোহিনীর তৃতীয় গ্রন্থ