পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতী । واوان ঘেরিয়া আছে! কোন কথা ভাবিবার আর অবসর নাই! তার কথা ভুলিতে চেষ্টা করি, কিন্তু, হায়, বৃথা । তার শীতল স্পর্শ হইতে একদওও পরিত্রাণ নাই ! আমার সমস্ত কাজের উপর তার রক্তআখিদুটা স্পষ্ট যেন দেথা যায় ! চারিধারে যেন কে বিষাদের গান গায়, আর, মাঝে মাঝে, কার তীব্ৰ হাসি ! কারাগৃহের জানালার ধারে, ও কার আঁখি ! সে, মৃত্যুর ! ভূতের মত সে আমার চারি পাশে ঘুরিতেছে! হাতে তার রাজু! আঃ, আমি কি পাগল হইব: সহসা ঘুম ভাঙিয়া গেল-কে যেন আমার মুখের উপর হইতে দৃষ্টি সরাইয়া লইল ! এ কি স্বপ্ন ! কারাগৃহের কঠিন প্রস্তরে, আলোকের ক্ষীণ রেখায়, প্রহরীর নীরব ভীষণ মুৰ্বিতে, জানালার ধারে—সৰ্ব্বত্র যেন কে ঘুরিতেছে ! মুখে তার একই কথা—ফাসি ! ফ সি ! R - অগষ্ট মাস ! নিৰ্ম্মল, স্নিগ্ধ, সুন্দর প্রভাত ! আজ তিন দিল আমার বিচার আরম্ভ হইয়াছে ! এ তিন দিনে আমার আসাধারণত্বের ংবাদ চারিদিকে ছড়াচয়৷ পড়িয়াছে। অলস লোকগুলা—কাজের জন্ত যারা একদণ্ড ৪ বাড়ী ছাড়িতে চাহিত ন},— আজ, আমাকে দেখিবার জন্ত, আদালতের প্রাঙ্গণে আসিয়া, দল বাধিয়া বসিয়া আছে ! মৃতদেহের চারিপাশে, শকুনির দল যেমন অধীর দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকে, তেমনি আজ আমারি জন্ত ইহার এত অধীর, চঞ্চল ! প্রহরীগুলার বীরদাপ, লোকগুলার নিরীহ মূৰ্ত্তি—আমার যেন অসহ বোধ হইতেছিল । প্রথম দুই রাত্রি, চোখে নিদ্রা ছিল না । বৈশাখ, ১৩১৭ প্রাণের মধ্যে কি এক ব্যাকুল আৰ্ত্তনাদ ! কি এক মুগভীর আশঙ্ক ! তৃতীয় রাত্রে, ক্লাস্ত চোখে নিদ্রার মোহস্পর্শ প্রথম অনুভব করিলাম-আবেশমন্ত্রী, ব্যথtহারিণী নিদ্ৰা ! প্রহরীর আহবানে নিদ্র। ভাঙিল! তার ভারী জুতা, চাবির গোচ্ছ, অর্গলমোচন—এ সকলের শব্দে ও নিদ্র ভাঙে নাই, সে আসিয়া ঠেলা দিয়া ডাকিল, “ওঠ !” আমি চোখ মেলিয়া চাহিলাম ! চারিধারে, কারাগৃহের কঠিন প্রস্তর । ছাদের নাচে, বায়ুপথের মধ্য দিয়া একটু আকাশ দেখিলাম ! সুৰ্য্যের আলো ফুটিয়া উঠিয়াছে ! এই স্থয্যের আলোটুকু আমি প্রাণের চেয়ে ভালবাসি ! আমি কহিলাম, “বেশ দিনটি!” প্রহরীট চুপ করিয়া রহিল—আমার কথায় জবাব দেওয়া, সে প্রয়োজন মনে করিল ন}—তার পর কি ভাবিয় সে কহিল, “এমনি ত মনে হয় ।” পাযাণের মত, আমি নিশ্চল । জ্ঞান ও ছিল না ! আমি সেই বায়ুপথের দিকে চাহিয়াছিলাম ! আবার কহিলাম, "বাঃ, বেশ দিনটি !” লোকটা কহিল, ”হা ! বাহিরে তোমার জন্ত সকলে অপেক্ষা করিতেছে !" এই কথাটুকু ! মাকড়সার জালের মত, এই কথাটুকু আমাকে আবার পুরাণো চিন্তার জালে জড়াইয়া ফেলিল ! নিমেযে, যেন আমি দেখিলাম—সেই নিৰ্ম্মম, হৃদয়হীন, রক্তপিপাসু বিচারপৃহ--সেই জজের গম্ভীর অপ্রসন্ন মুখ-নিরীহ সাক্ষীম দল, পুতুলের মত চিত্রকর যেন তাদের চোখ—সতর্ক, সপ্রতিভূ প্রহরী ও চাপরাশির দল—কালে গাউন মণ্ডিত উকিলের গৰ্ব্বিত, উদ্ধত মুষ্টি