পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল—কলকাতার শ্বেতাঙ্গদের ব্যবহার এবং মহাযুদ্ধ।

১৯০৯ সালে জানুয়ারি মাসে পি. ই. স্কুল ছাড়বার পর থেকে ইংরেজদের সঙ্গে আমার বিশেষ সম্পর্ক ছিল না। ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ সালের মধ্যবর্তী সময়টুকুর মধ্যে স্কুলের পরিদর্শক বা ঐজাতীয় দু-একজন সরকারী কর্মচারী ছাড়া ইংরেজ খুব কমই আমার চোখে পড়েছে। কটক শহরেও ইংরেজ বেশি দেখা যেত না, কারণ কটকে ইংরেজের সংখ্যাই ছিল অতি অল্প, তার উপরে তারা থাকতোও শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। কিন্তু কলকাতায় এসে ঠিক এর উল্টো ব্যাপার হল। প্রতিদিন কলেজে যেতে এবং কলেজ থেকে ফিরতে সাহেবপাড়ার মধ্য দিয়ে আমাকে যাতায়াত করতে হত। ট্রামগাড়িতে প্রায়ই নানারকম অপ্রিয় ব্যাপার ঘটত। ইংরেজরা ভারতীয়দের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করত। কখনো কখনো দেখা যেত ইংরেজযাত্রীদের সামনের সীটে ভারতীয় বসে থাকলে নির্বিকারচিত্তে তারা সেই সীটে জুতোশ‍ুদ্ধ পা তুলে দিয়েছে, ভারতীয় যাত্রীটির গায়ে হয়তো জুতো ঠেকত, কিন্তু তাতে ইংরেজদের কোনো ভ্র‌ূক্ষেপই ছিল না। অনেক ভারতীয় বিশেষ করে গৱিব কেরানীর দল এসব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে যেত, কিন্তু সকলের পক্ষে তা সম্ভব হত না। আমি তো এসর একেবারেই সহ্য করতে পারতাম। ট্রামে যেতে প্রায়ই ইংরেজদের সঙ্গে আমার বচসা লাগত। কচিৎ কখনো সাহেবদের সঙ্গে ভারতীয়দের মারামারি করতে দেখা যেত। রাস্তায়ও একই ব্যাপার ঘটত। ইংরেজরা চাইত তাদের দেখলেই ভারতীয়েরা যেন পথ ছেড়ে দেয়, না ছাড়লে ধাক্কা দিয়ে, ঘুষি মেরে তাদের পথ থেকে সরিয়ে দিত। ইংরেজ সৈন্যগুলি ছিল আর এক

৯২