পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মিঃ ওটেন ছাত্রদের হাতে বেদম মার খেলেন। খবর পেয়ে খবরের কাগজের অফিস থেকে শুরু করে লাটভবন পর্যন্ত সর্বত্র ভীষণ উত্তেজনা দেখা দিল।

ছাত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তার নাকি মিঃ ওটেনকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরে সিঁড়ি দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। পেছন থেকে একবারই মাত্র তাঁকে আঘাত করা হয়েছিল, কিন্তু সেও এমন কিছু মারাত্মকভাবে নয়। তাঁকে যারা ঘায়েল করেছিল তারা সকলেই ছিল তাঁর সামনে। ব্যাপারটা আমি স্বচক্ষে দেখেছিলাম, কাজেই ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছিল জোর গলায় তার প্রতিবাদ করছি।

এই ঘটনার পরেই বাঙলা সরকার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আমাদের কলেজ বন্ধ রাখবার হুকুম দিলেন এবং কলেজে ক্রমাগত কেন গোলমাল হচ্ছে সে সম্বন্ধে তদন্ত করবার জন্য একটি তদন্ত-কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিলেন। সরকারপক্ষ স্বভাবতই সাংঘাতিক খেপে গিয়েছিল, এবং এমনও শোনা গেল প্রয়োজন বোধ করলে চিরকালের জন্য কলেজ বন্ধ করে দিতেও তারা পেছপা হবে না। বলা বাহুল্য, সরকারের তরফ থেকে কলেজ-কর্তৃপক্ষ সবরকম সাহায্যই পেতে পারতেন, কিন্তু একটা গোলমাল হয়ে গেল। সরকারী বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আমাদের অধ্যক্ষের সঙ্গে সরকারপক্ষের বিরোধ দেখা দিল। অধ্যক্ষ মনে করলেন কলেজ বন্ধ রাখবার আদেশ জারি করবার আগে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ না করে সরকার তার আত্মসম্মানে ঘা দিয়েছেন। এ নিয়ে তিনি শিক্ষাবিভাগের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এক হুলুস্থ‌ূল কাণ্ড বাধিয়ে দিলেন। পরের দিনই আর একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ পেল— মান্যবর মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে অত্যন্ত অভদ্র ব্যবহারের অভিযোগে

৯৯