পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হত আমাদেরই। দেশী নিয়ম অনুসারে মড়া ঘাড়ে করে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে পোড়াতে হত। যেক্ষেত্রে মৃতের টাকাপয়সা-ওয়ালা আত্মীয়স্বজন থাকতো, অভাব হত শ‍ুধু শ্মাশানবন্ধুর, সেক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হত সহজেই। কিন্তু সৎকারের পয়সা অনেক ক্ষেত্রে জুটতো না, ঝুলি নিয়ে বের‍ুতে হত চাঁদার ধান্ধায়। আমরা যাদের শ‍ুশ্র‌ূষা করেছি তাদের ছাড়া অন্যদের বেলায়ও সৎকারের জন্য ডাক পড়ত, এবং তাতে সাড়া দিতাম।

সেবা-শ‍ুশ্র‌ূষার কাজ ভালো লাগলে কী হবে, সমস্ত সময় তাতেও কাটতো না। তাছাড়া এ একটা সাময়িক প্রয়োজন। জাতীয় দূর্দৈবের স্থায়ী সমাধান এর মধ্যস্থতায় হবার নয়। দলের আলাপ-আলোচনায় দেশগঠনের কাজকে অবহেলা করে শুধু হাসপাতাল, দুর্ভিক্ষ আর বন্যা নিয়ে মেতে থাকার জন্য রামকৃষ্ণ মিশনের প্রচুর মুণ্ডপাত করেছি; তাদের ভুলের পুনরাবৃত্তি করি এমন ইচ্ছা ছিল না। সুতরাং যুবসংগঠনে হাত দিলাম। বহু, যুবককে একত্র করলাম, তাদের নানান শিক্ষার জন্য বিভিন্ন বিভাগসহ এক সংগঠন খাড়া করা হল। যতদিন আমি ছিলাম ততদিন এই কাজ ভালোই চলেছিল। এই সময়ে অস্পৃশ্যতার সমস্যায় পড়তে হল। আমাদের প্রিয় আস্তানা এক হস্টেলে মাঝি নামে একটি সাঁওতাল ছাত্র থাকত। সাধারণত সাঁওতালরা নিচু জাত বলে ছিল অবজ্ঞার পাত্র; কিন্তু ছাত্রদের দিলদরিয়া মেজাজে জাতের শুচিবাই লাগেনি, মাঝিকে হস্টেলে সানন্দে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন বেশ চলল। তারপর একদিন একটি ছাত্রের চাকর মাঝি সাঁওতাল জানতে পেরে অন্য চাকরদের খেপিয়ে তুলে গোলমাল বাধাতে চেষ্টা করল। মাঝিকে না তাড়ালে কোনো চাকর কাজ করবে না এই তার দাবি। সুখের বিষয়

১০৭