পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(এক্সপেরিমেণ্টাল সাইকলজি) নিয়ে পড়ব। এই নতুন বিজ্ঞানে আমার ঝোঁক চেপে গেল সহজেই, কিন্তু এই নিয়ে লেগে থাকা কপালে হল না।

বাবা তখন কলকাতায়। একদিন সন্ধ্যেবেলা হঠাৎ আমাকে ডেকে পাঠাতে গিয়ে দেখি একটা ঘরে মেজদার সঙ্গে বসে আছেন। জিগগেস করলেন আই. সি. এস. দেবার জন্য বিলেতে যেতে চাই কি। যদি যাবার ইচ্ছা থাকে তো যত শিগগির সম্ভব রওনা হতে হবে। প্রস্তাব চিন্তা করে দেখার জন্য সময় মিলল চব্বিশ ঘণ্টা। আমি একেবারে আকাশ থেকে পড়লাম। কয়েক ঘণ্টা চিন্তার পর যাওয়াই স্থির করলাম। মনস্তত্ত্বের গবেষণা মাথায় উঠল। যা কিছু ভেবে চিন্তে স্থির করতে যাই সবই ঘটনার দুবরি স্রোতে ভেসে যায়। মনস্তত্ত্বকে বিদায় দিতে আপত্তি নেই, কিন্তু আই. সি. এস. বনে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করাটা সহজে মনঃপুত হতে চায় না। নিজেকে প্রবোধ দিলাম যে বিলেতে গিয়ে গুছিয়ে বসতে বসতে পরীক্ষার আর আট মাস থাকবে, যা আমার বয়েস তাতে সুযোগ মিলবে একটি মাত্র, সুতরাং ও পরীক্ষায় পাশ করে ব্রিটিশের অধীনতা করার ভরসা কম। আর যদি বা কোনোক্রমে উত‍রে যাই, কী করব না করব স্থির করার অপর্যাপ্ত সময় থাকবে।

এক সপ্তাহের নোটিশে কলকাতা ত্যাগ। সারা পথ জাহাজে খাবার মতো ব্যবস্থা কোনোক্রমে করা গেল। মুশকিল বাধল পাসপোর্ট নিয়ে। বাঙলার মতো প্রদেশে এ ব্যাপারে গোয়েন্দা বিভাগের উপর একান্তভাবে নির্ভর করা ছাড়া উপায় নেই। এবং পুলিশের দষ্টিতে আমার ইতিহাস নিতান্ত নির্দোষ না হবারই কথা। সৌভাগ্যক্রমে পুলিশ বিভাগে আমাদের এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের সাহায্যে

১১৮