পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দিন যত দীর্ঘই হোক, তারো শেষ আছে। অবশেষে টিলবারি পৌছনো গেল। চারদিক ভিজে, মেঘে ঢাকা আকাশ; একেবারে বিখ্যাত লণ্ডনী আবহাওয়া। কিন্তু বাইরের প্রকৃতির রূপ একঘেয়ে হলে কী হয় আমাদের সামনে এত উত্তেজনার খোরাক ছিল যে অন্যদিকে আমাদের নজরই পড়ল না। প্রথম যখন টিউব-স্টেশনে নেমে গেলাম, তখন নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ পেয়ে স্ফ‌ূর্তির অবধি ছিল না।

পরের দিন থেকেই যোরাঘুরি শ‍ুর‍ু করলাম। প্রথমেই গেলাম ক্রম‍্ওয়েল রোডে ভারতীয় ছাত্রদের উপদেষ্টার কাছে। ভদ্রলোকের ব্যবহারটি মধুর, নানা উপদেশও তাঁর কাছে মিলল, কিন্তু কেম্ব‌্রিজে ঢোকা সম্বন্ধে তিনি আশ্বাস দিতে নারাজ। ভাগ্যক্রমে কেম্ব‌্রিজের কয়েকজন ভারতীয় ছাত্রের সঙ্গে ওখানেই দেখা হয়ে গেল। তাদের মধ্যে একজন পরামর্শ দিল যে ক্রম‍্ওয়েল রোডে সময় নষ্ট না করে সোজা কেম্ব‌্রিজে গিয়ে চেষ্টাচৱিত্র করাই ভালো। পরের দিনই কেম্ব‌্রিজে হাজির হলাম।

কয়েকজন উড়িষ্যার ছেলেকে অল্পস্বল্প চিনতাম, তাদের কাছ থেকে কিছ সাহায্য পাওয়া গেল। তাদের মধ্যে একজন ফিজউইলিয়াম হল্ এর ছেলে (এস. এম. ধর) আমাকে তাদের সেন্সর, রেড়েওয়ে সাহেবের কাছে নিয়ে গেল। রেডেওয়ে অতি সহৃদয় ব্যক্তি, ধৈর্য ও সহানুভূতির সঙ্গে আমার বক্তব্য শুনলেন, অবশেষে জানালেন যে সোজাসুজি আমাকে ভরতি করে নেওয়াই তাঁর অভিপ্রায়। ভরতির সমস্যা চুকে যেতে প্রশ্ন উঠল টার্মের। চলতি টার্ম শুরু হয়ে গেছে দু সপ্তাহ আগে, যদি সেটা আমি ধরতে না পারি তো ডিগ্রি পাবার জন্য অতিরিক্ত এক বৎসর এখানে কাটাতে হবে। নতুবা আমার ডিগ্রি

১২৩