পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আছেন। ভারতবর্ষ সম্বন্ধে এক বিতর্কে স্যর অসওয়াল্ড মস‍্লে (তখন বামপন্থী লিবারেল বা শ্রমিকদলীয়) যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ডায়ার-ও'ডায়ারের নীতিকে প্রবলভাবে আক্রমণ করেছিলেন এবং সমগ্র ব্রিটেনে চাঞ্চল্য এনেছিলেন এই বলে যে ১৯১৯ সালের {তারপর তাঁর ভোল কী রকম বদলেছে সেটা সকলেই জানেন) অমৃতসরের ঘটনা জাতিগত বিদ্বেষের পরিচায়ক। গিল্ডহলে কেম্ব‌্রিজবাসীদের খনিমজুরদের অবস্থা বোঝাতে এলেন স্যর জন সাইমন ও মিস্টার ক্লাইন‍্স্। স্যর সাইমনকে কিঞ্চিৎ মজা দেখার জন্য আণ্ডারগ্র্যাডরা ভিড় করে এসেছিল। তিনি সহজে পার পেলেন বলাই বাহুল্য। কিন্তু ক্লাইন‍্স (বোধ হয় নিজেই এক সময় খনিমজুর ছিলেন) এমন আন্তরিকতা ও আবেগের সঙ্গে বক্ত‌ৃতা করলেন যে যার ব্যঙ্গ করতে এসেছিল তারাও শেষ পর্যন্ত অভিভূত হয়ে পড়ল। যে ছয় টার্ম আমি কেম্ব‌্রিজে ছিলাম তার মধ্যে ব্রিটিশ ও ভারতীয় ছাত্রদের সম্পর্ক ভালোই ছিল কিন্তু বন্ধুত্বের স্তরে খুব কমই উঠেছে। শ‍ুধু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকেই একথা বলছি। এর মূলে ছিল একাধিক কারণ। যুদ্ধের প্রভাব ছিল অবশ্যই, তাছাড়া ছিল সাধারণ ব্রিটিশের ব্যবহাৱের বাহ্য রঙচঙের আড়ালে প্রচ্ছন্ন একটা শ্রেষ্ঠত্বের অহঙ্কার। আর আমরা যুদ্ধপরবর্তী ঘটনাবলী, বিশেষত অমতসরের বিপর্যয়ের পর আত্মসম্মান ও জাতীয় সম্মান সম্বন্ধে স্বভাবতই একটু সজাগ (হয়তো একটু অতিরিক্ত সজাগ) ছিলাম। মধ্যবিত্ত ইংরেজ মহলে জেনারেল ডায়ারের প্রতি সহানুভূতি দেখে আরো দুঃখ হত। মোটের উপর বোধ হয় বৃটিশ ও ভারতীয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের কোনো ভিত্তি ছিল না। রাষ্ট্রনীতিক দিক দিয়ে আমরা পূর্বের চেয়ে অনেক সজাগ, অনেক

১২৮