পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে বাঁধা সড়কে চলব না; তাছাড়া বহুকালের আদর্শ ছিল, যেগুলিকে চিরকাল আঁকড়ে ধরে থেকেছি, আজ চাকরি নিলে সেগুলিকে জীবন থেকে বিদায় দিতে হয়।

কিন্তু ইস্তফা দেবার আগে দুটো জরুরি কথা ভাববার ছিল। এক, লোকে কী ভাববে? দুই, আজ ঝোঁকের মাথায় চাকরি না নিয়ে, পরে আবার পস্তাতে না হয়। ঠিক কাজ করছি কি না সে বিষয়ে আমি কী সম্পূর্ণ নিঃসন্দেহ?

মনস্থির করতে দীর্ঘ সাতমাস লেগে গেল। ইতিমধ্যে মেজদার সঙ্গে চিঠিপত্র চলতে লাগল। সৌভাগ্যের বিষয় আমার চিঠিগুলি মেজদা সযত্নে তুলে রেখেছিলেন। আমি যেগ‍ুলি পেয়েছিলাম সেগুলি রাষ্ট্রনীতির ঝড়ঝাপ‍্টার মধ্যে কোথায় উড়ে গেছে জানি না। আমার মনের অবস্থার সংকেত হিসেবে আমার চিঠিগুলির মূল্য আছে। ১৯২০ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি আই. সি. এস. পরীক্ষার ফল বের‍ুলো। কয়েকদিন পরে এসেক্স-এ লী-অন-সীতে ছুটি উপভোগ করতে এসে মেজদাকে ২২শে সেপ্টেম্বর লিখলাম:


“আপনার অভিনন্দনসূচক পত্র পাইয়া যারপরনাই আনন্দিত হইয়াছি। জানি না আই. সি. এস. পরীক্ষায় পাশ করিয়া আমার কী তেমন লাভ হইয়াছে, কিন্তু এই খবরে যে সকলে খুশি হইয়াছেন এবং পিতামাতার মন এই দুর্দিনে একটু হাল্কা হইয়াছে ইহাতেই আমার আনন্দ।

“আমি এখানে বেট‍্স্ সাহেবের অতিথির‍ূপে বাস করিতেছি। বেট‍্স্ সাহেবের মধ্যে ইংরাজ চরিত্রের শ্রেষ্ঠ পরিচয় পাই। ভদ্রলোক মার্জিত, মতামতে উদার, ভাবে সর্বদেশিক। র‍ুশ, পোলাণ্ডবাসী,

১৩৫