পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লিথুনীয়, আয়র্লণ্ডীয় ও অন্যান্য বিদেশী বন্ধুদের মধ্যে তাঁহার আনাগোনা। রাশিয়ান, আইৱিশ ও ভারতীয় সাহিত্যে তাঁহার প্রচুর উৎসাহ, রমেশ দত্ত ও রবীন্দ্রনাথের রচনায় তাঁহার গভীর অনুরাগ।.. প্রতিযোগিতায় চতুর্থ হওয়ার জন্য আমি রাশিকৃত অভিনন্দন পাইতেছি। তবু আই. সি. এস. গোষ্ঠীতে প্রবেশ করার চিন্তায় কিছুমাত্র আনন্দ পাইতেছি একথা বলা চলে না। যদি এই চাকুরিতে যোগ দিতে হয় তবে এ পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করিতে যের‍ূপ অনিচ্ছা লইয়া বসিয়াছিলাম সের‍ূপ অনিচ্ছার সঙ্গেই তাহা করিতে হইবে। চাকুরিজীবনে মোটা মাহিনা ও তাহার পর মোটা পেনসন আমার বরাদ্দ থাকিবে তাহা জানি। দাসত্বে যদি যথেষ্ট কুশলতা অর্জন করি তো একদিন কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত হইবার আশাও রাখা চলে। যোগ্যতা থাকিলে, গোলামিতে সুপ্রতিষ্ঠিত হইলে হয়ত চীফ সেক্রেটারি হওয়াও অসম্ভব নহে। কিন্ত‍‌ু চাকুরিকেই কি আমার জীবনের শেষ লক্ষ্য বলিয়া মানিয়া লইতে হইবে? চাকুরিতে সাংসারিক সুখ পাওয়া যাইবে কিন্ত‌ু সেটা কী আত্মার মুল্য দিয়াই ক্রয় করিব? আমার মনে হয় আই. সি. এস. গোঠীর কোনো লোককে চাকুরির আইনকানুনকে যেভাবে মাথা নিচু করিয়া মানিয়া লইতে হয় তাহার সঙ্গে জীবনের উচ্চ আদর্শকে মানাইয়া লইবার চেষ্টা ভণ্ডামি ভিন্ন কিছু নয়।

“সাধারণ লোকের কথায় যাকে বলে ঞ্জীবনে উন্নতি করা তাহার তোরণে দাঁড়াইয়া আমার মনের অবস্থা কী হইয়াছে তাহা আপনি নিশ্চয় বোঝেন। এ চাকুরির স্বপক্ষে বলিবার অনেক কিছু আছে। প্রত্যহ অগণ্য লোকে হাবুডুবু খাইতেছে যে অন্নের চিন্তায় সেই অন্নচিন্তা ইহাতে চিরকালের জন্য মিটিয়া যাইবে। জীবনের সম্মুখে

১৩৬