পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নহে। চাকুরিতে থাকিয়া দেশের কোনো উপকার করা চলে না ইহা আমার বক্তব্য নহে। আমি বলিতে চাই যে তাহাতে যেটুকু মঙ্গল উপজাত হইতে পারে আমলাতন্ত্রের শখলমুক্ত দেশসেবার তুলনায় তাহা অতি নগণ্য। নীতির দিকটাও এখানে দেখিতে হইবে সেকথা পূর্বেই বলিয়াছি। বিদেশী আমলাতন্ত্রের অধীনতাকে মানিয়া লওয়া আমার নীতিতে অসম্ভব। জনসেবার প্রথম প্রয়োজন সমস্ত সাংসারিক আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ। সাংসারিক উন্নতির পথ একেবারে পরিত্যাগ করিলে তবেই জাতীয় কর্মে সম্পূর্ণভাবে আত্মোৎসর্গ করা সম্ভব। আর মনশ্চক্ষুতে অরবিন্দ ঘোষের দৃষ্টান্ত সর্বদা উজ্জ্বল রহিয়াছে। ক্রমেই বোধ করিতেছি যে সেই আত্মত্যাগের দ্বারা সেই দৃষ্টান্তের দাবি মিটাইতে পারিব। আমার চতুষ্পার্শ্বিক অবস্থাও তাহার অনুকূল।”


দেখা যাচ্ছে যে তখন পর্যন্ত অরবিন্দ ঘোষের প্রভাব আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তিনি আবার রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ফিরে আসবেন এ ধারণা তখন চারদিকে অতি প্রবল ছিল।

এর পরের চিঠি ৬ই এপ্রিল অক্সফোর্ড থেকে লেখা। তখন আমি ছুটির সময়টা অক্সফোর্ডে কাটাচ্ছি। ততদিনে আমার পরিকল্পনাকে অগ্রাহ্য করে পিতৃদেবের চিঠি এসেছে। কিন্তু আমি তখন ইস্তফা দেওয়ার সঙ্কল্প পুরোপুরি গ্রহণ করেছি। ৬ই এপ্রিলের চিঠি থেকে কিছু অংশ এখানে উদ্ধ‌ৃত করে দিচ্ছি:

“পিতৃদেবের ধারণা আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন সিভিল সার্ভিস চাকুরিয়ার পক্ষে নব্য শাসনব্যবস্থায় জীবন মোটেই দুর্বিষহ হইবে না। দশ

১৪২