পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সজ্ঞেয়বাদ। একপক্ষে আমি বিশ্বাসে ভিত্তি করে কিছু ধরে নিতে রাজী নই। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার চাই, অথচ পাই না। অপরপক্ষে অসংখ্য ব্যক্তি অতীতে যা পেয়েছেন বলে দাবি করেন তাকে ধোঁকাবাজি বলে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। উড়িয়ে দিতে হলে আরো অনেক কিছু উড়িয়ে দিতে হয়, তাতে রাজী নই। সুতরাং যতদিন পর্যন্ত না নিজে পরা মনের এই জ্ঞানকে প্রত্যক্ষ করছি, ততদিন পর্যন্ত হাঁ বা না কোনোটাই বলা চলে না। সুতরাং আপেক্ষিকতাবাদে আশ্রয় নিতেই হয়। অর্থাৎ আমাদের আয়ত্তে যে জ্ঞান আসে সে জ্ঞান পরম নয়, আপেক্ষিক। আমাদের যৌথ মানসিক কাঠামোর, ব্যক্তিপ্রকৃতির ও ব্যক্তির মধ্যে কালগত পরিবর্তনের প্রতি তার আপেক্ষিকতা।

একবার যদি মেনে নিই যে পরমাত্মার জ্ঞান আমাদের সীমাবদ্ধ মনের সঙ্গে আপেক্ষিক সম্পর্কে যুক্ত, তবে দার্শনিক তর্কবিচারের দায় থেকে অনেকখানি রেহাই পাওয়া যায়। আরে বোঝা যায় যে পরমাত্মা সম্বন্ধে বিভিন্ন ধারণার প্রত্যেকটিই গ্রাহ্য হতে পারে, কারণ ভিন্নতার মূল হচ্ছে ব্যক্তিপ্রকৃতির ভিন্নতা। এমন কি মানসিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে একই ব্যক্তির জ্ঞানের তারতম্য ঘটতে পারে। নানা জ্ঞানের কোনোটিকেই মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়া চলে না। বিবেকানন্দের ভাষায় “মানষের গতি মিথ্যা থেকে সত্যের দিকে নয়, সত্য থেকে আরো উচ্চতর সত্যের দিকে। সুতরাং সহিষ্ণুতার ভিত্তিটা খুবই ব্যাপক হওয়া প্রয়োজন।”

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে আমার ধারণায় যে বাস্তব ধরা দিচ্ছে সে যদি পরম না হয়ে আপেক্ষিক হয় তবেই বা তার প্রকৃতি কি? প্রথমত তার একটা নিরপেক্ষ অস্তিত্ব আছে, সে মায়ামাত্র নয়। আমার এই ধারণা

১৫২