পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কারণবহির্ভূত ধরে-নেওয়া নয়, এর ভিত্তি হচ্ছে বাস্তব, ব্যবহারিক দৃষ্টি। মায়াবাদ কার্যক্ষেত্রে অচল। আমার জীবনের সঙ্গে তাকে মেলানো চলে না যত চেষ্টাই করি (বহু চেষ্টা করেছিলাম)। সুতরাং তাকে বর্জন করা ভিন্ন উপায় কি? অপরপক্ষে জীবন যদি বাস্তব এবং সত্য হয় (পরম নয় আপেক্ষিক অর্থে) তবে জীবনের অর্থ হয়, উদ্দেশ্য হয়, জীবনকে ভালো লাগে।

দ্বিতীয়ত এই বাস্তবতা স্থাণু নয়, সচল, সদাই পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তনের কি কোনো গতিমখ আছে? অবশ্যই আছে, এর গতি শ্রেষ্ঠতর অস্তিত্বের দিকে। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি যে পরিবর্তন কেবল অর্থহীন গতি নয়, প্রগতি।

আরো দেখা যায় যে আমার পক্ষে বাস্তবতা হচ্ছে সচেতন উদ্দেশ্যশীল স্থানকালের মধ্যে ক্রিয়াশীল আত্মা। এই বর্ণনার মধ্যে অবশ্য বর্ণনাতীত, আমার বুদ্ধির অগম্য যে পরম সত্য, তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং এ হচ্ছে আপেক্ষিক সত্য যার মূর্তি আমার মনের পরিবর্তনের অনুসরণরত। এতে আক্ষেপের কিছু নেই। ইমার্সন বলেছিলেন বুদ্ধিহীন সঙ্গতি ক্ষুদ্র মনের পরিচায়ক। তাছাড়া পরিবর্তন ভিন্ন প্রগতি কোথায়? তব এর মধ্যেই বাস্তবতার সম্বন্ধে আমার ব্যাপকতম ধারণার বাস, এরই ভিত্তিতে আমার জীবন অহরহ গঠিত হচ্ছে।

কেন আত্মাকে বিশ্বাস করি? কারণ এই বিশ্বাসের ব্যবহারিক প্রয়োজন আছে। আমার প্রকৃতির দাবি এই আত্মায় বিশ্বাস। প্রকৃতির মধ্যে আমি উদ্দেশ্য ও বিন্যাস দেখতে পাই; নিজের জীবনে দেখি 'বিস্ফারামাণ উদ্দেশ্য'। আমার বোধশক্তি বলছে যে আমি কেবলমাত্র পরমাণুর স্ত‌ুপ নই। আমি দেখতে পাচ্ছি যে বাস্তবতা কেবলমাত্র

১৫৩