পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিজেদের সম্পূর্ণ খাপ খাইয়ে নিয়েছিলাম। আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়েদের অত্যন্ত ভদ্র বলে বাইরে যথেষ্ট খ্যাতি ছিল—আমরা সেই খ্যাতি কখনো ক্ষুন্ন হতে দিইনি। আমাদের বাপমাও আমাদের শিক্ষাদীক্ষা সম্বন্ধে বেশ নিশ্চিন্ত ছিলেন। আমাদের পরিবার সম্পর্কে স্কুলকর্তৃপক্ষের ধারণা খুব ভালো ছিল, কারণ আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা প্রায় সকলেই নিজের নিজের ক্লাসে বরাবর সর্বোচ্চ স্থান দখল করে এসেছে।

খেলাধুলার ব্যাপারে এখানে যথেষ্ট যত্ন নিলেও বিলিতী আদর্শে পরিচালিত স্কুলে যতটা নেওয়া উচিত ঠিক ততটা নেওয়া হত না। আগাদের প্রধান শিক্ষকমশাই নিজে খেলাধুলায় তত উৎসাহী ছিলেন না বলেই বোধ হয় এদিকে তাঁর দৃষ্টি বিশেষ প্রখর ছিল না। প্রধান শিক্ষকমশাই অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোক ছিলেন এবং তাঁর প্রভাব স্কুলের সর্বত্র টের পাওয়া যেত। নিয়মানুবর্তিতা ও ভদ্র আচরণকে তিনি শিক্ষার সবচেয়ে বড় অঙ্গ বলে মানতেন। আমাদের প্রগ্রেস রিপোর্টে শুধু, পাঠ্য বিষয়েই নম্বর দেওয়া হত না, (১) স্বভাব, (২) আচরণ, (৩) পরিচ্ছন্নতা, (৪) সময়ানুবর্তিতা ইত্যাদিতেও নম্বর ছিল। এর ফলে স্কুলের ছেলেমেয়েরা সকলেই খুব ভদ্র ছিল। দুষ্টুমি করলে বা স্কুলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে ছেলেদের বেত মেরে সাজা দেওয়া হত, তবে স্কুলের মধ্যে মাত্র দুজনেরই বেত মারার ক্ষমতা ছিল—একজন আমাদের প্রধান শিক্ষকমশাই আর একজন তাঁরই সুযোগ্য পত্নী মিসেস্ ইয়াং।

মিস্টার ইয়াং-এর অনেকগুলি অদ্ভ‌ুত অভ্যাস ছিল, তাই নিয়ে নিজেদের মধ্যে আমরা যথেষ্ট হাসাহাসি করতাম। ইয়াং-এর বড় এক ভাই

২৭