পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছিল। প্রথমত, নতুন নতুন ভাবধারার সন্ধানে দর্শন, ইতিহাস এবং জাতীয়তাবাদের উপরে নতুন নতুন বই পড়া এবং এইভাবে যে জ্ঞান লাভ হত সেটা সকলের মধ্যে সঞ্চারিত করে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় এবং বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন সভ্য সংগ্রহ করাও আমাদের অন্যতম কাজ ছিল, ফলে অল্পদিনের মধ্যেই বহুলোকের সঙ্গে আমাদেৱ যোগাযোগ ঘটেছিল। আমাদের তৃতীয় কাজ ছিল নামকরা লোকদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় করা। যদি কোনো সাধু সন্ন্যাসীর কাছে সত্যের সন্ধান মেলে সেই আশায় বারাণসী, হরিদ্বার ইত্যাদি তীর্থস্থান পরিদর্শন করে ছুটির দিনগুলি কাটানো হত। অনেকে আবার দেশের প্রকৃত ইতিহাসের সন্ধানে ঐতিহাসিক জায়গাগুলিতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করত। আমি একবার এমনি একটি দলের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলাম। সাতদিন ধৱে পরিভ্রমণ করার ফলে প্রাক্-বৃটিশ যুগের বাঙলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ সম্বন্ধে বহু মূল্যবান তথ্য আমরা আবিষ্কার করেছিলাম—স্কুল-কলেজে মাসের পর মাস পড়লেও বা কখনোই সম্ভব হত না।

কতকগুলি সমস্যা তখনো পর্যন্ত আমরা ঠিকমতো সমাধান করে উঠতে পারিনি। পরিবারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কী দাঁড়াবে বুঝতে পারছিলাম না। দলের নাম, আইনকানুন বা নিদিষ্ট একটি কর্ম্মপস্থা তখনো ঠিক হয়নি। অনেক আলাপ আলোচনার পর ভেবেচিন্তে শেষটায় ঠিক হল, সত্যিকারের ভালো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলবো। চতুর্দিকে এই প্রতিষ্ঠানের শাখা থাকবে। দলের কয়েকজন এই উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন এবং উত্তর ভারতের গ‍ুরুক‍ুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমসাময়িক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা পরিদর্শন করতে শুরু করল।

৭৩