পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আত্মোপলব্ধি বা জ্ঞানযোগ; ডক্তি এবং প্রেমের মধ্য দিয়ে আত্মোপলব্ধি বা ভক্তিযোগ; এবং নিষ্কাম কর্মের মধ্য দিয়ে আত্মোপলব্ধি বা কর্মযোগ। পরবর্তী কালে এদের সঙ্গে আরো দুটি মত যুক্ত হয়েছে—হঠযোগ এবং রাজযোগ। হঠযোগের উদ্দেশ্য শরীরকে সম্পূর্ণ নিজের কর্তৃত্বাধীনে আনা, আর রাজযোগের উদ্দেশ্য শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে মনকে নিজের কর্তৃত্বাধীনে আনা। বিবেকানন্দ বলতেন চরিত্র গঠন করতে জ্ঞান, ভক্তি এবং কর্ম— তিনেরই প্রয়োজন। বিভিন্ন যোগের একটি সুষ্ঠ‌ু সমন্বয় কী করে হতে পারে সে সম্বন্ধে অরবিন্দর ধারণায় বেশ আঙিনবত্ব ছিল। তিনি দেখাতে চেষ্টা করেছিলেন বিভিন্ন যোগের সাহায্যে কী ভাবে ধাপে ধাপে পরম সত্যে পৌঁছন যায়। বাঙলার তৎকালীন বৈষ্ণবদের কর্মএবং জ্ঞান-বিমুখতার তুলনায় অরবিন্দর এই নতুন দর্শন আমার কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছিল—আমি যেন প্রকৃত সত্যের সন্ধান পেলাম। অরবিন্দ শ‍ুধু যদি সে সময়ে কর্মজীবনে ফিরে আসতেন তবে বিনা দ্বিধায় তাঁকে মানবজাতির আদর্শগ‍ুর‍ু বলে মেনে নিতাম।

সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির লোক ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি। তাঁকে এক সময়ে বাঙলার মুকুটহীন রাজা বলা হত। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতাদের তিনি অন্যতম। যতদূর মনে পড়ে ১৯১৩ সালের শেষে কিংবা ১৯১৪ সালের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকায় মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহ সম্পর্কে কলকাতার টাউন হলে অনুষ্ঠিত একটি সভায় তাঁকে প্রথম দেখি। তখন পর্যন্ত সুরেন্দ্রনাথের অসাধারণ বাগ্মিতায় দেশ মুগ্ধ। সভার মধ্যেই তিনি প্রচুর টাকা তুলে ফেললেন। কিন্তু অত ভালো বক্তা হলেও সুরেন্দ্র

৭৯