পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাঞ্জাবে এবং যুক্তপ্রদেশে। আর্যসমাজের লোকের সঙ্গে আমাদের এত মেলামেশা করতে দেখে পাণ্ডা মহারাজ তো খেপে অস্থির। আমাদের সাবধান করে দিলেন, আর্যসমাজের লোকেরা মূর্তিপূজা মানে না, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

মথুরায় বাঁদরের উৎপাতে টেঁকা দায় ছিল। এক মুহুর্তের জন্যও যদি দরজা কিংবা জানালা খোলা থাকত হতভাগাগ‍ুলি ভিতরে ঢুকে যা পেত নিয়ে যেত কিংবা ভেঙে ছিঁড়ে তচ্নচ্ করত। মথুরা থেকে বেরিয়ে আমরা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। এরপর গেলাম বৃন্দাবন। বৃন্দাবনে পৌঁছন মাত্র পাণ্ডাৱা এসে আমাদের ছেঁকে ধৱল। তাদের এড়াবার জন্য বললাম, আমরা গ‍ুর‍ুকুল বিদ্যালয় দেখতে এসেছি। এতে ফল হল কারণ, শোনা মাত্র তারা কানে আঙুল দিয়ে বলল আমাদের সেখানে যাওয়া মোটেই উচিত নয়, কোনো হিন্দু, সেখানে যায় না। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত তাদের কবল থেকে ছাড়া পাওয়া গেল।

বন্দাবন থেকে কয়েক মাইল দূরে কুসুম সরোবর নামে একটি জায়গা আছে। সেখানে ছোটো ছোটো কুঁড়েঘরে একদল বৈষ্ণবসাধক বাস করতেন। গাছপালা ঘেরা এই কুটিরগ‍ুলির আশেপাশে হরিণ, ময়ূর ইত্যাদি ঘুরে বেড়াত। ধর্মচর্চার পক্ষে জায়গাটা বাস্তবিকই অতি চমৎকার। আমরা ওখানে খুব আদরযত্নে কয়েকটা দিন কাটিয়ে এলাম। আখড়ায় মৌনীবাবা বলে একজন সাধক ছিলেন-তিনি দশ বছর যাবৎ মৌনীব্রত পালন করছিলেন। আধড়ার অধ্যক্ষ রামকৃষ্ণদাস বাবাজী ছিলেন হিন্দুশাস্ত্রে একঞ্জন সুপণ্ডিত, তিনি বললেন শঙ্করাচার্যের অদ্বৈতবাদের চেয়ে বৈষ্ণব দ্বৈতাদ্বৈতবাদ উন্নততর।

৮৮