পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১০৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○I奪S-@" | সমক্ষে স্বৰ্গগমন করিলেন । এই বল্লভাচাৰ্য্য কর্তৃক প্ৰতিষ্ঠিত অভিনব ধৰ্ম্ম সম্প্রদায়কেই বল্লভাচারী সম্প্রদায় কহে । বল্লভাচাৰ্য্য মহাত্মার প্রকৃত ধৰ্ম্মমত কি ছিল, তাহা বৰ্ত্তমান বিলাস-বাসনা-সক্ত গোস্বামী মহোদয়গণের দুনীতি হইতে জানিতে পারা যায় না । ইহারা বল্লভাচাৰ্য্যের ধৰ্ম্মমত যেরূপ ব্যাখ্যা করেন তাহা এই যে “পরমেশ্বরের উপাসনার জন্য উপবাস, বনবাস ও নানাপ্রকার কষ্ট সহ্য করিবার কোনও প্ৰয়োজন নাই । সুন্দর বেশভূষা পরিধান ও বিষয়-সুখ সম্ভোগ পূর্বক শ্ৰীকৃষ্ণের সেবা কর তাহা হইলে মোক্ষলাভ হইবে।” ভাটিয়া বণিক ও বণিক পত্নীরাই সাধারণতঃ এই সম্প্রদায় ভুক্ত। উহারা গোস্বামী মহারাজদিগকে স্বয়ং শ্ৰীকৃষ্ণের অবতার জ্ঞানে মনপ্ৰাণ এমন কি দেহ পৰ্য্যন্ত অৰ্পণ করিয়া থাকে । ইহাদিগকে মহারাজ কহে । প্ৰকৃতপক্ষেই ইহঁরা মহারাজ উপাধি ধারণের উপযুক্ত, কারণ এই বল্লভপন্থী মহারাজদের ঐশ্বৰ্য্য ও ভোগসুখ দেখিলে রাজভোগও তুলনায় অতি সামান্য ও তুচ্ছ বলিয়া প্ৰতীয়মান হয়। শিষ্য এবং শিষ্যার গুরুদৰ্শন, স্পৰ্শন, গুরুকে দোলায় বসাইয়া দোল দেওয়া, গুরুর অঙ্গে চন্দন লেপন, তাহার পদ প্ৰক্ষালন, গুরুর সহিত একাসনে উপবেশন, গুরুর সহিত অর্থাৎ মদন মূৰ্ত্তির সহিত স্ত্রীজাতি শিষ্যার একগুহে অবস্থিতির জন্য গুরুর নিজের কিংবা তাহার কোনও সেবকের পদাঘাত খাইবার জন্য, গুরুর প্রতিনিধির দ্বারা রাসক্রীড়া ইত্যাদি নানাপ্রকার কুৎসিৎ ব্যাপারে ৫২ পাঁচ টাকা হইতে ৫০০০ পাঁচ শত টাকা পৰ্য্যন্ত শিষ্য ও শিষ্যগণকে দিতে হয়। লিখিতেও ঘুণ বোধ হয় যে বৈষ্ণব-কুল-বধূগণ এই সকল মহারাজগণকে শ্ৰীকৃষ্ণের ন্যায় জ্ঞান করিয়া তাহার সেবায় রমণীর অমূল্য গৌরব সতীত্ব রত্ন পৰ্য্যন্ত উৎসর্গ করিতে কুষ্ঠিত হন না । হায়রে ধৰ্ম্মান্ধ ভারতবাসী ! কিছুদিন পূর্বে গুজরাটের প্রসিদ্ধ সমাজ-সংস্কারক স্বৰ্গীয় কারসন দাস মূলজী— বোম্বাই সুগ্ৰীমকোর্টে মহারাজ লাইবেল নামক মোকদ্দমায় এই সম্প্রদায়ের নীতি বিগহিত আচরণগুলি জনসমাজে প্রচার করিয়া গুজরাত সমাজের মহা উপকার সাধন করিয়াছেন, ইহার পর হইতে মহারাজগণের নানাবিধ জঘন্য অত্যাচার কিয়ৎ পরিমাণে প্ৰশমিত হইয়াছে।