পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তবে এই তীৰ্থস্থলে পহুছিতে পারা যায়। দুঃখের পরে সুখ এবং সুখের পর দুঃখ ইহা স্বাভাবিক। আমরাও কি এই ভীষণ পাৰ্বত্য পথে কোনও শান্তিই পাই নাই ? ভীষণত্বের মধ্যে কি শান্ত-শীতল মধুর সৌন্দর্ঘ্যের পূর্ণ অভিব্যক্তি জাগিয়া উঠে নাই ? মনে পড়ে, প্রখর আতপ-তপ্ত দেহে একার ভীষণ কঁকুনি সহিতে সহিতে যখন আডিডায় বিশ্রাম করিতে বসিয়াছিতখনকার সে শান্তি, হে কল্পনাকুশল পাঠক ! তুমি হৃদয়ঙ্গম করিতে পরিবে । না ? সেই কঠিনদেহ পৰ্বত অঙ্গে শিলার উপরে বসিয়া মনে হইয়াছে কি শান্তি ! ধীরে অতি ধীরে বন্য কুসুমসৌরভ চুরি করিয়া বাতাস আমাদিগকে উপহার দিয়াছে—মধুরকণ্ঠ বন্য-বিহঙ্গগণ সঙ্গীত বিলাইয়াছে। আর উপল-ত্বরিত-চরণ স্বাদুনীরা সৌম্য নিঝরিণী সুন্দরী তাহার মধুর। হৃদয়ের অনাবিলসুিগ্ধ প্ৰেম-সঞ্জীবনী আকণ্ঠ ভরিয়া পান করাইয়াছে। সেই অনন্তবিস্তৃত নীলাম্বরতলে চারিদিকের প্রতিবেষ্টনির মধ্যে যে অনির্বচনীয় সুখ ও শান্তি পাইয়াছি-কই গৃহ-পিঞ্জরে ত, তাহ পাই নাই। সত্য সত্যই মুক্তি এক অপূৰ্ণ আনন্দ,-সে আনন্দ গৃহবদ্ধ জীবের পক্ষে । সুদুর্লভ রত্ন। চিন্তাপূৰ্ণী হইতে প্ৰত্যুষে রওয়ানা হইয়া সন্ধ্যার প্রাক্কালে। আসিয়া জ্বালামুখীতে পহুছিলাম। আহা ! কি আনন্দ-এতদিনে মনোবাসনা পূর্ণ হইল। - এখানে একটা কথা বলা আবশ্যক। আমরা যে পথে জ্বালাজী আসিয়া- ৷ ছিলাম, সে পথ ছাড়া অন্য একটী পথেও জ্বালামুখী আসিতে পারা যায়, উহ! পাঠান কোট ষ্টেশন হইতে আরম্ভ হইয়াছে। অমৃতসর যাইয়া সেখা, হইতে পাঠান কোট ব্রাঞ্চ লাইনে গিয়া পাঠান কোট ষ্টেশনে নামিতে হয়। ] পাঠান কোট হইতে কাঙ্গরা হইয়া জ্বালামুখী। পাঠান কোট হইতে । কাঙ্গর দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে এবং কাঙ্গরা হইতে জ্বালামুখী দক্ষিণ দিকে । অবস্থিত। পূর্ব রাস্ত হইতে এ রাস্তাটি অনেকটা সুগম। । জ্বালাজীর স্বর্ণমণ্ডিত মন্দিরটা দেখিতে পাইয়া প্ৰাণ জুড়াইল। ষে ধন- । কুবের পাঞ্জাবকেশরী রণজিৎ সিংহ ও কাশীধামের বিশ্বের দেবের মন্দির ও : ইহাও সেই মহাপুরুষেরই কীৰ্ত্তি। হায়! আজি ভীহার বংশধরগণের কি !