পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একান্ত ভদ্রব্যক্তি, প্রায় প্রতি দিবসই আসিয়া আমাদের সহিত সাক্ষাৎ - করিতেন। ইহাদের মধ্যে প্ৰায় সকলেই সঙ্গীত-প্ৰিয় এবং কেহ কেহ । সঙ্গীত-কলা-বিশারদও ছিলেন, আমরা নিমন্ত্রিত হইয়া সঙ্গীত শ্রবণের জন্য । গিয়া যারপর নাই গ্ৰীত হইয়া ফিরিয়া আসিতাম। ইহাদের সহিত । আমাদের এইরূপ সৌহাৰ্দ্য হইয়াছিল যে মুলতান পরিত্যাগ সময়ে অশ্রািজল । মোচন না করিয়া আসিতে পারি নাই। সেই সুদূর দেশের বিদায় কালীন শোক-দৃশ্যটি আজ কতকাল পরে এখনও মনে পড়িয়া চিত্ত ব্যথিত করিতেছে, এখন তাহারাই বা কোথায় আর আমরাই বা কোথায় ! কিন্তু - তবু যেন মানসচক্ষে মুলতান ষ্টেসনের সেই জনতার মধ্যে স্নেহ পরিপূর্ণ মধুর মুখ কয়খানি বাঙ্গালী সুলভ হৃদয়ভরা গ্ৰীতি রাশির সহিত—কিদায়ের অশ্রুভরা সম্ভাষণ দেখিতে পাইতেছি, ইহাকেই না মায়ার বন্ধন ৰলে ? যখন গাড়ী ছাড়িয়া দিল মুগ্ধের মত জানালার ভিতর দিয়া বন্ধুদের পানে চাহিয়া রহিলাম—তাহারাও যতদূর পর্য্যন্ত গাড়ী দেখা যাইতেছিল ততক্ষণ পৰ্য্যন্ত আমাদের দিকে চাহিয়াছিলেন । নৈরাশ্য কাতর ব্যথিত নয়ন হইতে দুই বিন্দু অশ্রুবারি ঝরিয়া পড়িল। তখন সন্ধ্যা হইয়া আসিয়াছিল, চারিদিকে স্নান অন্ধকার রাশি পুঞ্জীভূত হইয়া আধিপত্য বিস্তার | করিতে লাগিল-আকাশের তারা সুন্দরীরা নয়ন তুলিয়া আমাদের দিকে চাহিতেছিলেন। সেই অন্ধকার ভেদ করিয়া বাষ্পীয় শকট কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুলতান হইতে ৬৪ মাইল দূরবর্তী বহাবলপুর নামক স্থানে উপনীত হইল। বহাবলপুরে একজন নবাব আছেন, ইহার সম্বন্ধে অনেক কথা শুনিলাম। ইনি বাঙ্গালীর প্রতি বড় শ্ৰীত নন। বিশেষ এখানে থাকার নানা অসুবিধার কথা শুনিয়া আমরা আর এখানে অবতরণ না করিয়া, বরাবর শিকারপুর হইয়া বেলুচিস্থান টেন টারমিনাস কোয়েটা নামক কেণ্টনমেণ্ট দর্শনাভিলাষে রূক জংশন নামক ষ্টেসনে উপস্থিত হইলাম। রূক জংশন হইতে এক রাস্ত করাচীতে এবং অপরটা কোয়েটাগিয়াছে ; রূক জংশনে বহুক্ষণ অপেক্ষা করিতে হুইয়াছিল। এস্থানের দৃশ্যাবলী নয়নানন্দ দায়ক নহে। ষ্টেসনটী এক উচ্চ টিলার উপরে অবস্থিত। সমতল ক্ষেত্রে ষে স্থানে আমরা বাসা করিয়াছিলাম (মোসাফি