পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । নিৰ্ম্মিত চতুষ্কোণ ভগ্নস্তম্ভের ভগ্নাবশেষ এখানে দর্শন করিলাম। ক্রমশঃ আমাদের অশ্বশকিট কৃতব মিনারের সন্নিকটে আসিয়া উপস্থিত হইল। ইহা বর্তমান দিল্লী নগরী হইতে এগার মাইল দূরে অবস্থিত। সাহােজাহানাবাদ হইতেই কুতবের দৃশ্য আমাদের নয়ন-মন মুগ্ধ করিয়াছিল, এখন নয়ন সমক্ষে এই অভ্ৰভেদী স্তম্ভ দর্শনে অপূর্ব আনন্দানুভব করিলাম। কুতবের চতুদিকে প্রাচীন ভগ্ন আটালিকার স্তুপ সমূহ ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত ভাবে বিরাজিত । ভারতবর্ষের আর কোথাও এইরূপ উচ্চ স্তম্ভ বিদ্যমান নাই। কেহ কেহ ইহাকে পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ স্তম্ভ বলিয়া বৰ্ণনা করিয়া থাকেন, কিন্তু তাহা ভুল। ইহা নিম্ন হইতে উৰ্দ্ধাদিকে ক্রমশঃ সরু হইয়া উঠিয়াছে। পাঁচটা সুদৃঢ় প্রচুর কারু-কাৰ্য্য বিভূষিত ঝুলান বারান্দা দ্বারা ইহা পঞ্চখণ্ডে বিভক্ত। এমনি সুকৌশলে এই বিরাট স্তম্ভ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে যে, নিম্নভূমি হইতে উৰ্দদিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলে ইহাকে স্বাভাবিক উচ্চতা অপেক্ষাও অধিকতর উচ্চ বলিয়া প্রতীয়মান হয় । ইহার প্রথম দুই খণ্ড লোহিত প্রস্তরের ও পরের দুইখণ্ড মৰ্ম্মর প্রস্তর দ্বারা সুগঠিত। কৃতব মিনারের উচ্চতা ২৪২ ফিট, নিম্নভাগের বেড় ১০৬ ফিট । কুতবের মধ্যভাগ ধূসর প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত । মিনারের তিনখণ্ডের গাত্রে লম্বভাবে গভীর খাঁজকাটা-খাজগুলি আবার এক এক খণ্ডে এক এক প্রকারের। প্রথম খণ্ডের যে খাজগুলি আছে, উহা অৰ্দ্ধবৃত্তাকার, পরেরটি সকোণ-দ্বিতীয় খণ্ডের খাজগুলি সমুদয়ই অৰ্দ্ধবৃত্তাকার এবং তৃতীয় খণ্ডের খাজগুলি সকলই সকোণ, বক্ৰী দুইখণ্ডের গাত্রে কোনও খাজা নাই । কুতবের উপরে উঠিবার ঘুরাণ ফিরান পথে সর্বশুদ্ধ ৩৮০টি সিড়ি আছে। আবার সিড়ি হইতে বারান্দায় আসিবার জন্য প্রত্যেক তলেই পথ আছে। মিনারের উদ্ধাংশও শ্বেত প্রস্তর নিৰ্ম্মিত বলিয়া বোধ হয়—আর উহার বহির্ভাগ খোদিত অক্ষরে চিত্রিত থাকায় দেখিতে অত্যন্ত মনোহর বোধ হয়। নিম্নতলের চারিদিকে ছয়টীি চক্রাকার লেখা দেখিতে পাওয়া যায়— তাহাদের সর্বোপরি যে চক্ৰ আছে তাহাতে কোরাণের বয়ানে সুচিত্রিত। উহার নিম্ন চক্ৰে আল্লার নিরানব্বই নাম ও তৃতীয় চক্ৰে মহম্মদ ঘোরীর কুতব মিনার। >(?や