পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইসলাম ধৰ্ম্ম সম্বৰ্দ্ধক এই ভজনালয়টি অবস্থিত। ইহার নিৰ্ম্মােণ-কৌশল ও গঠন নৈপুণ্যা পুণ্যাদি ভারতের কোনও শ্রেষ্ঠ অট্টালিকা হইতেই নূ্যন নহে। এই মসজিদের সম্মুখভাগের প্রাচীরের বেধ প্ৰায় ৮ ফুট, উহাতে সাতটা বৃহৎ খিলান পথ—মধ্যের খিলান ২২ ফুট, প্রশস্ত এবং উচ্চতায় প্রায় ৫৩ ফুট, হইবে। আর উভয়দিকের খিলান কয়েকটির প্রত্যেকে ১০ ফুট প্রশস্ত এবং ২৪ ফুট উচ্চ। পাঁচ সারি দীর্ঘতম এবং অত্যুৎকৃষ্ট নানাবিধ খোদাই পূর্ণ হিন্দু স্তম্ভ এই গৃহের ছাদ রক্ষা করিতেছে। এই সুন্দর মসজিদের সম্মুখভাগ ১৪৫ ফুট দীর্ঘ এবং ৯৬ ফুট প্রশস্ত একটী প্রাঙ্গণ দ্বারা পূর্ব ও পশ্চিম ভাগে বিস্তৃত, ইহার প্রস্থের দিক দুই সমভাগে বিভক্ত। পশ্চিমাংশের মধ্যস্থলেই দিল্লীর বিখ্যাত “লৌহস্তম্ভ"। লৌহস্তম্ভের চারিদিকে নানাবিধ কারুকাৰ্য পরিপূর্ণ বহু হিন্দুস্তম্ভ দেখিতে পাইলাম। :( । কুতব মিনারের উত্তর পশ্চিম দিকে সুলতান আলটামসের সমাধি আলট্ৰামসের অৰস্থিত। এই সমাধি মন্দির ১২৩৬ খ্ৰীষ্টাব্দে সামসুদ্দীন সমাধি । আলটামসের মৃত্যুর পর তদীয় পুত্ৰ সুলতান রৌকিউদ্দীন ও তাঁহার কন্যা সাম্রাজ্ঞী রিজিয়া কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। এই সমাধি-মন্দিরের উপরে কোনও ছাদ নাই, পাছে ছাদে বাঁধা প্ৰাপ্ত হইয়া মৃতের আত্মা স্বর্গে গমন করিতে না পারে তদুদ্দেশ্যেই ইহার ছাদ নিৰ্ম্মিত হয় নাই। এই সমাধিমন্দিরের নিকটে কয়েকটা বৃহৎ কৃপ । দৃষ্ট হয়, এ সকল কৃপের মধ্যে বৃহত্তমটি দ্বিতীয় অনঙ্গপাল কর্তৃক খনিত হইয়াছিল। লৌহস্তম্ভ সম্বন্ধে এখন আমাদের বক্তব্য শেষ করিব। “দিল্লীর" নামোৎপত্তি সম্বন্ধে আলোচনা করিবার সময় আমরা প্ৰথমেই ইহার সম্বন্ধে প্ৰচলিত জনপ্ৰবাদ লিপিবদ্ধ করিয়াছি । এই স্তম্ভটি নরম পেটা লৌহ দ্বারা নিৰ্ম্মিত । ইহার শিরোভাগ বৌদ্ধ অনুশাসন সমূহের স্তম্ভের শিরোভাগের ন্যায়। পল কাটা । উপরে একটা গৰ্ত্ত আছে,-বোধ হয় কোনওরূপ মূৰ্ত্তি স্থাপনোদ্দেশ্যেই ঐ রূপ গৰ্ত্ত করা হইয়াছিল,—কিংবা হয়ত ইহার উপরে কোনও রূপ দেবমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠাপিত ছিল, পরে মুসলমান রাজগণের অত্যাচারে তাহা দূরীভূত হইয়াছে। ফাগুসন সাহেব এই অদ্ভুত স্তম্ভটি দর্শনে বিস্ময়াভিভূত হইয়া । SV0.