পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/২৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । এই বংশে সুবাচমল্প, গুলনসুর, ধোলারায়, মাণিকরায়, হর্ষ রায়, বীরবিলন্দু নামক রাজগণ রাজত্ব করেন। গজনীর মামুদ ভারতবর্ষ আক্রমণে আসিলে এই বীর বিলন্দুই ভঁাহার সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন। বীরবিলন্দুর পরে বিশালদেব, সারঙ্গদেব, অনহ, জয়পাল, অজয়দেব, বিশালদেব প্ৰভৃতি রাজা হন। তাহার পর আবার নানা অবস্থান্তরের পরে ১৮২০ খ্ৰীষ্টাব্দে আজমীর ও মাড়বার ইংরেজ-রাজের হস্তগত হইয়াছে। আজমীর ষ্টেসনে নামিবামাত্রই একজন মুসলমান ছুটিয়া আসিয়া আমাদের হস্তে একটী পুষ্প প্ৰদান করিল,--ইহারা পাণ্ডা। হিন্দুতীর্থে যেমন পাণ্ডাঠাকুরেরা যাত্রীদিগকে নিজ নিজ করতলগত করিতে যথাসাধ্য সাধ্যসাধনা, বাক্যব্যয় ও ভীতিপ্ৰদৰ্শনাদি করিয়া থাকেন, এখানকার দরগার মুসলমান পাণ্ডারা তদ্রুপ না করিয়া, এই পুষ্প দান করিয়া যাত্রীককে বরণ করিয়া লয়েন। পুষ্প দানের অর্থ এই যে ‘আমিই তোমাকে আজমীর দরগার দর্শকরূপে বরণ করিয়া লইলাম, তুমি অন্য কাহারও সহিত আর দরগায় প্রবেশ করিতে পারিবে না, দেনা-পাওনা । ইত্যাদি। আমার সঙ্গেই করিতে হইবে, ষ্টেসনে নামিবামাত্ৰই এইরূপ । পুষ্প দানে আমি অবাক হইয়া গিয়াছিলাম, পরে আমার পাণ্ডা মহাশয়ের প্ৰমুখাৎই সমুদয় অবগত হইলাম। বৰ্ত্তমান আজমীর নগর মোগল-রাজত্বের মধ্যভাগে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, সেকালের নগর-সমূহের ন্যায়। ইহাও একটা দুৰ্গবন্ধ সহর, এখনও প্রাচীন পরিখার চিহ্নসমূহ বিদ্যমান রহিয়াছে। এই সহরেও পাঁচটী “তোরণ আছে—যথা দিল্লী, আগ্রা, মাদার, ঔশ্ৰী ও ত্রিপলী দরওয়াজা। হিন্দুর পবিত্র তীর্থ পুষ্কর আজমীরের অনতিদূরে বিরাজিতমাত্ৰ সাত মাইল ব্যবধান। পার্বত্য পথে হাঁটিয়া কিংবা একা-আরোহণে তথায় পহুছিতে পারা যায়। পার্বত্য পথের পৌরুষ সৌন্দৰ্য্য ভ্ৰমণকারীর চিত্ত-সুখ-উৎপাদন করিয়া থাকে। যাত্রিগণ পুষ্কর হ্রদে স্নান করেন। হ্রদে কয়েকটী কুম্ভীর আছে, কিন্তু কোনও যাত্রীর কোনওরূপ অনিষ্ট করিয়াছে এইরূপ শুনিতে পাওয়া যায় না । আজমীর ষ্টেসনেই বহু হিন্দু পাণ্ডার সমাগম হইয়া থাকে, তাহারা সেখান হইতেই যাত্রী-শিকার ধরিয়া আনেন । পুষ্কর তীর্থে অবগাহন করিয়া পরে So পুষ্কর তীর্থ।