পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্ৰা । ক্রান্ত বিষয়ের আলোচনা করিতেন, আবার এই কক্ষই সঙ্গীতকলা-বিশারদ তানসেনের সুমধুর সঙ্গীত-রবে। প্ৰতিধ্বনিত হইত। আজ সে সমুদয়ই অতীতের গর্ভে বিলীন হইয়া গিয়াছে । খাস-মহলের কক্ষগুলি ক্ষুদ্র কিন্তু সমুদয়ই শ্বেত মৰ্ম্মর প্রস্তর দ্বারা আিম নিৰ্ম্মিত। প্রকোষ্ঠ সমূহ যমুনার ধারে নিৰ্ম্মিত বলিয়া ইহাদের সৌন্দৰ্য্য শত গুণে বদ্ধিত হইয়াছে। খাস-মহলের ঠিক পূর্বদিক দিয়া নীলকায়া যমুনা-সুন্দরী প্রবাহিতা। কাবুল, পারস্য, ইরাণ, কাশ্মীর ও তুৰ্কীস্থান প্ৰভৃতি বিভিন্ন দেশ-দেশান্তর হইতে আনীত চম্পক-গৌরী সুন্দরীবৃন্দের কল-হাস্যে একদিন এই সমুদয় কক্ষ প্ৰতিধ্বনিত হইত এবং সিরাজীর ফেনোেচ্ছলিত-ঢল-ঢল তরল তরঙ্গে একদিন ইহাদের চতুর্দিক উদ্বেলিত হইত। নৰ্ত্তকীর নূপূর-শিঞ্জনে, যৌবনের উন্মত্ত-উচ্ছাসে মন্মথের ফুলধনু এখানে দিবস-যামিনী দৌরাত্ম্য করিত, কিন্তু আজ সেই সুন্দরীগণের পদব্রজে আবরিত স্থান মহামৌনতার বিজন-শ্যাশান । চিড়িয়ার কলাগানে, সিরাজী-শিথিল-মধুরকণ্ঠের উচ্ছাসে, নুপূরের রুণুরুণু ঝুনু-ঝুনু রবে। এ প্রাসাদ এখন আর মুখরিত হয় না। খাস-মহলের সংলগ্ন-অঙ্গুরিবাগ নামক উদ্যান অবস্থিত। পূর্বে এ স্থানে একটা ক্ষুদ্র উদ্যান ছিল, এখন সে পুরাতনের আর বিন্দুমাত্রও চিহ্ন বিদ্যমান নাই। এক সময়ে ইহাই বাদশাহের অন্তঃপুর-চারিণী মহিলাগণের প্রমোদোদ্যান ছিল। সিপাহীবিদ্রোহের সময়ে ইংরেজ সৈন্যগণ সপরিবারে এই স্থানে বাস করিয়াছিল। এবং এই স্থানেই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শাসনকৰ্ত্ত কলভিন সাহেব জীবন-লীলা সম্বরণ করেন । খাস-মহলের একটী বারাণ্ডাতে প্ৰসিদ্ধ সোমনাথ মন্দিরের কাষ্ঠ নিৰ্ম্মিত বিশাল দ্বারদ্বয় দেখিলাম। ইহা বিশেষ কারুকাৰ্য্য পূর্ণ। দ্বারদ্বয়ের সম্মুখে কাষ্ঠ-ফলকের উপরে ইহার সংক্ষিপ্ত-বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে। ১৮৪২ খ্ৰীষ্টাব্দে আফগান যুদ্ধের শেষে ইংরাজগণ গজনী নগরস্থ মামুদের সমাধি-হৰ্ম্ম্য হইতে এই কাষ্ঠ-নিৰ্ম্মিত দ্বার দুইটী লইয়া আসেন এবং ইহাই সোমনাথ মন্দিরের প্রাচীন দ্বার বলিয়া ঘোষণা করেন, কিন্তু প্রত্নতত্ত্ববিদ সুপ্ৰসিদ্ধ পণ্ডিত ফাগুসন সাহেব এই মত ভ্ৰান্ত বলিয়া ঠিক করিয়াছেন। তাহার মতে, ইহাতে হিন্দু শিল্পের আদর্শ বিদ্যমান নাই, Qbro n»9