পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৩৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্ৰা । বলিয়া অন্য মোগল-স্থাপত্যের সহিত। এগুলির বিশেষ পার্থক্য দৃষ্ট হয়। এইগুলিতে একটা গাম্ভীৰ্য্য ও শৌর্য্যও বর্তমান আছে,—ইহা বেশ অনুভূত হয়। বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি যে, খাসমহলের নিকটস্থ একটী ক্ষুদ্র দ্বার। দিয়া এক অন্ধকারময় পথে অগ্রসর হইয়া, এক গৰ্ত্তের নিকট পহুছিয়াছিলাম, উহার নিম্ন প্রদেশের কিছুই দৃষ্ট হইতেছিল না, তবে গৰ্ত্তের ৫৷৭ ফুট উপরে একটা বৃহৎ কাষ্ঠ দেখিতে পাইলাম, আমাদের প্রদর্শক বলিল যে এই কাষ্ঠ হইতে লম্বমান রজজুর সাহায্যে সম্রাটুগণ রাজান্তঃপুরচারিণী দ্বিচারিণীগণকে ফাঁসী দিতেন, শুনিতে পাইলাম যে এই গৰ্ত্তের সহিত যমুনার সংযোগ আছে। এতদ্ব্যতীত আরও কতকগুলি অন্ধকারময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ দেখিলাম-—এগুলি নাকি গুরু অপরাধে অভিযুক্ত পুরবাসিনী রমণীবৃন্দের কারাগৃহ রূপে ব্যবহৃত হইত। এ সমুদয় দেখিয়া মোগল সম্রাটুগণের কঠোর অন্তঃপুর-শাসনের বিষয় চিন্তা করিয়া শরীর শিহরিয়া উঠিল! অতঃপর আগ্রা দুর্গ হইতে বাহির হইয়া আমরা বাসার দিকে চলিলাম । এতক্ষণ পৰ্য্যন্ত দৰ্শন-কুহিকে এতদূর মুগ্ধ ছিলাম যে, সন্ধ্যার ধূসর ছায়ার সূক্ষ-ব্যাপ্ত অনুভব করিতে পারি নাই, এখন চাহিয়া দেখি সূৰ্য্যদেব অস্তগমনোন্মুখ-নিস্তেজ লোহিত কিরণ-রশ্মি চতুর্দিকে ছড়াইয়া পড়িয়াছে, পশ্চিমাকাশ গোলাপি-আভার মেঘে বিভূষিত । আমরা দুৰ্গ হইতে বাহির হইবার সময় দিল্লী গেট দিয়া আসিলাম । এই দ্বারের সন্নিকটে ইংরেজ সেনানিবাস অবস্থিত। প্রাঙ্গণে প্ৰফুল্লকুসুমের মত ইংরেজ বালকবালিকাগণ ক্রীড়া করিতেছে। তাহদের বদনে স্বাধীনতার জীবন্ত চিহ্ন প্ৰতিফলিত । বাসায় প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিাবার সময় পথে জামে-মসজিদ দেখিয়া আসিলাম। ইহা আগ্ৰা দুৰ্গ । ষ্টেসনের অনতিদূরেই অবস্থিত। এই মসজিদটিও মতি মসজিদ প্রভৃতির। ন্যায় উচ্চ বেদীর উপরে নিৰ্ম্মিত। যদিও ইহা সৌন্দর্ষ্যে " ও শিল্প-নৈপুণ্যে মতি-মসজিদের ন্যায় নহে, তথাপি ইহা উপেক্ষণীয় নহে। দূর হইতেই ইহার শ্বেত ও লোহিত-প্রস্তর-নিৰ্ম্মিত গুম্বজ পথিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া থাকে। মসজিদের শিলালিপি পাঠে। জ্ঞাত হওয়া যায় যে, সম্রাট শাহজাহাঁর রাজত্বকালে তাহার সেবাপরায়ণ৷