পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ। বারাণসী পুরী”, অর্থাৎ কলিযুগে বারাণসী ক্ষেত্রই একমাত্র মোক্ষপ্ৰদ পুণ্যতীর্থ এবং বিশ্বেশ্বরদেবই একমাত্র দেবতা। অতি প্ৰাচীনকাল হইতেই হিন্দুঋষিগণ বিশ্বেশ্বর রূপী এই ভগবানকে অৰ্চনা করিয়া আসিতেছেন। “শিবপুরাণে” বিশ্বেশ্বরের মাহাত্ম্য-সম্বন্ধে লিখিত আছে যে — · “পঞ্চক্রোশ্যাঃ পরং নান্যৎ ক্ষেত্ৰঞ্চ ভুবনত্ৰীয়ে। অথবা পাপিনাং পাপস্ফোটনায় স্বয়ং হরঃ ॥ মর্ত্যলোকে শুভং ক্ষেত্ৰং সমাবস্থায় স্থিতঃ সদা । যথা তথাপি ধন্যেয়ং পঞ্চক্রোশী মুনীশ্বরাঃ ॥ যত্র বিশ্বেশ্বরে দেবো হ্যাগত্য সংস্থিতঃ স্বয়ম। যদিনং হি সমারভ্য হরঃ কাশ্যামুপাগতঃ। তদিনং হি সমারভ্য কাশী শ্রেষ্ঠতর। হ্যাভূৎ ৷” ( শিবপুরাণ, জ্ঞানসংহিতা, ৪৯ অঃ । ) অর্থাৎ, “হে ঋষিবৃন্দ । ত্ৰিলোকের মধ্যে পঞ্চক্রোশবেষ্টিত এই স্থানের ন্যায় পবিত্রতম পুণ্যস্থান আর কোথাও নাই, নিজে পরমকারুণিক দেবাদিদেব মহাদেব পাপিগণের পাপ বিনাশ করিবার জন্য এই সুন্দর পুণ্যপ্ৰদ স্থান নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করিতেছেন। যে দিবস হইতে মহাদেব এই পুণ্য তীর্থে আগমন করিয়াছেন, সেই সময় হইতেই বারাণসী শ্রেষ্ঠতম হইয়াছে।” কাশীর প্রাচীনত্ব এই বিশ্বেশ্বরলিঙ্গ হইতেও বিশদরূপে বুঝিতে পারা যায়। প্ৰায় সাড়ে বারোশিত বৎসর পূর্বে চৈনিক পরিব্রাজক হিউএনসিয়াং যখন এস্থান দর্শন করিতে আইসেন, তখন তিনি এস্থানে শতহস্ত উচ্চ তামমণ্ডিত বিশ্বেশ্বরের লিঙ্গ দর্শন করিয়াছিলেন ; কিন্তু এখন তাহার কোনও রূপ বিবরণই পাওয়া যায় না। কোনও পুরাতন গ্রন্থাদিতেও এইরূপ কোন বর্ণনা লিখিত নাই । কেহ কেহ অনুমান করেন যে, ১১৯৪ সালে কাশী-নরপতি রাঠোর জয়চাদ যখন সাহেব।উদ্দীন ঘোরীর সেনাপতি কুতবউদ্দীন কর্তৃক পরাভূত ও নিহত হন, বোধ হয় সে সময়ে মুসলমানগণ কর্তৃক সেই পবিত্র লিঙ্গ বিধ্বস্ত হইয়াছে। কথিত আছে যে, মুসলমানেরা কাশীর প্রায় ১০০০ এক হাজার দেবমন্দির ভগ্ন করিয়া মসজিদ নিৰ্ম্মাণ