পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । —ইহা মথুরার কি প্রাচীন বৌদ্ধ, কি আধুনিক মন্দিরাদির স্থাপত্যের সদৃশ নহে। মন্দিরের মধ্যভাগ অতি বিস্তৃত, সুপরিস্কৃত। লিঙ্গটার কুণ্ডটীি অতি পরিষ্কার। ভূতেশ্বর লিঙ্গের লিঙ্গ ভাগ অতি দীর্ঘ যেন একটী ক্ষুদ্র স্তম্ভাকার। তাহার গাত্রে বিরাট গুম্ফ বিশিষ্ট ও ত্ৰিলোচন মুখে খোদিত আছে। এই কুণ্ড মধ্যেই আর এক ক্ষুদ্র লিঙ্গ আছে,--তিনি ‘ব্রজেশ্বর বা “কৃষ্ণেশ্বর'—পাণ্ডারা বলেন শ্ৰীকৃষ্ণ নিত্য পূজার জন্য নিজ প্রাসাদে যে লিঙ্গ স্থাপন করেন, ইহা সেই মূৰ্ত্তি, অপরে বলেন, ইহা অনিরুদ্ধ পুত্ৰ মহারাজ বজের স্থাপিত লিঙ্গ। “ভূতেশ্বর’ই এই তীর্থের অধিপতি, যদিও মথুরা বৈষ্ণব তীৰ্থ বৈষ্ণবধৰ্ম্মের এক প্রধান ক্ষেত্র তথাপি শ্ৰীকৃষ্ণ এখানকার ক্ষেত্রপতি নহেন । তীর্থযাত্ৰিগণকে স্থানকাল উল্লেখ সঙ্কল্প করিবার সময় জম্বুদ্বীপে ভারতবর্ষে ভগবল্লীলাক্ষেত্রে মথুরামণ্ডলে ভুতেশ্বর সমীপে বিশ্রাম ঘাটের বলিতে হয়। ইহা হইতে বুঝা যাইতেছে যে শৈব-বৈষ্ণবের আচার গত সম্প্রদায় গত দ্বন্দ্ৰ থাকিলেও উভয় দলের আচাৰ্য্যের কেমন সুন্দরভাবে সমন্নয় করিবার চেষ্টা করিয়া গিয়াছেন । কাশীতে তীৰ্থকাৰ্য্য করিবার সময়ও শ্ৰীবিষ্ণ, প্রীতিকাম হইয়া করিতে হয়। এইরূপ বৃন্দাবনে গোপেশ্বর শিবের নামে সঙ্কল্প পড়িবার নিয়ম আছে। বৃন্দাবনের গোপেশ্বর মাহাত্ম্য মথুরার ভূতেশ্বর মাহাত্ম্য অপেক্ষা কোন অংশে হীন নহে। উভয়েই ক্ষেত্রপতি বলিয়া বৈষ্ণবগণেরও বিশেষরূপে পূজ্য হইয়া আছেন। এমন কি চৌরাণী ক্রোশ গণনাও এই শিবস্থান হইতেই আরম্ভ করা হয়, এই ক্ষেত্রপতির নিকট সঙ্কল্প করিয়া ইহারই নিকট প্ৰতিজ্ঞ যাত্ৰা করিতে হয় এবং এইখানে আসিয়াই শেষ করিতে হয় । কাশীর কাল ভৈরবের ন্যায় এই ক্ষেত্রপতিই এখানকার তীর্থফল দাতা । সঁহার মহিমার তীর্থ, তিনি উপাস্যমাত্র তীর্থফলদাতা নহেন। ভুতেশ্বর মন্দিরের পার্শ্বে বলভদ্রকুণ্ড নামক একটী পুণ্যসলিলা পুষ্করিণী বিদ্যমান-এ স্থানের নিকট বহু প্ৰাচীন বৌদ্ধকীৰ্ত্তি সমূহ বিরাজিত থাকিলেও চিরদিনই এখানে হিন্দুকীৰ্ত্তি বিঘোষিত হইয়া থাকে। প্রতি বৎসর শ্রাবণী পূর্ণিমায় এ স্থানে একটা মেলা হয়, সে সময় বহু জন সমাগম হইয়া থাকে। বলভদ্রকুণ্ডের প্রায় একমাইল দক্ষিণ পশ্চিমে চৌবাড়া বা চৌরাশি স্তুপ হইতে এক সময়ে একটী হস্তি দন্তের কারুকাৰ্য্য ՀԳԵ"