পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sisve-les বিশ্বজনমনোমোহন গোবিন্দজীর ও রাধারণীর যুগলমূৰ্ত্তি দর্শনে হৃদয়ে অপূর্ব গ্ৰীতি ও তৃপ্তির ভাব অনুভব করিলাম। শিল্পীর দৃষ্টিতে মূৰ্ত্তিযুগলের সৌন্দৰ্য্য তাদৃশ মনোরঞ্জক না হইলেও ভক্তের নেত্ৰে তাহা পাপতাপহারী শ্ৰীমধুসূদনের সাক্ষাৎ সজীব মূৰ্ত্তি ও সেরূপের আর "নাহি কোন তুল।” কি সুন্দর দৃশ্য! শত শত নরনারী দর্শন মাত্রেই ছিন্নকদলী বৃক্ষের মত মস্তক নত করিল। সেই বিশ্বপতির দর্শনে ভক্তি গদগদাচিত্তে করযোড়ে করুণা ও ভক্তি ভিক্ষা করিতে লাগিল। অনেকের মুখে পুণ্যের কনক কিরণ-ছটার উজ্জ্বল দীপ্তি, নয়নে অনুতাপাশ্রু ও আনন্দাশ্রু সম্মিলিত হইয়া গণ্ড বাহিয়া পতিত হইতেছে--সে যে কেমন এক শান্তি ও পবিত্রতার পুণ্যসম্মিলন তাহা হৃদয়ঙ্গম ব্যতীত লেখনীমুখে বিকাশ অসম্ভব। এখানে ছোট বড় ভেদ নাই-ধনী নির্ধন ভেদ নাই জাত্যাভিমান নাইসকলি সমান । এই নিখিল ব্ৰহ্মাণ্ডপতির নিকট পার্থিব রাজা মহারাজার গৰ্বোন্নত শির আপনা হইতেই ধূল্যাবলুষ্ঠিত হইয়া পড়ে। এ জ্ঞােনরাজ্যে —এ ভক্তিরাজ্যে—সব সমান। নিখিল ব্ৰহ্মাণ্ডপতির গৌরবময় বিকাশের নিকট মানুষের ক্ষুদ্র স্বাৰ্থ, ক্ষুদ্র সুখ শান্তি যে কত নগণ্য অদ্য তাহা হৃদয়ে অনুভব করিয়া আপনাকে ধন্য জ্ঞান করিলাম। গোবিন্দজীর মন্দির দর্শনান্তে আমরা মদনমোহনের মন্দির দেখিতে অগ্রসর মদনমোহনের হইলাম। এই সুন্দর ও সুগঠিত দেব-মন্দির মুলতান নগরবাসী मद्रि । কৃষ্ণদাস কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। মন্দিরের উচ্চতা ২২ ফিট। ইহার অন্তর্মধ্যভাগ দৈর্ঘ্যে ৫৭ ফিট, তৎসঙ্গে নাটমণ্ডপটি ২০ ফিট চৌড়া। এই মন্দিরের বার্ষিক আয় প্রায় ১০১০০ টাকা। ঔরঙ্গজেবের দৌরাত্ম্যে মদনমোহনের শ্রীমূৰ্ত্তি জয়পুরে স্থানান্তরিত হয়—তদবধি এই মন্দিরে এখন আর মদনমোহনের মূৰ্ত্তি নাই। জয়পুরের রাজা সে সময়ে মদনমোহন বিগ্রহকে আপনার শ্যালক কসৌলির রাজা গোপাল সিংহকে দান করেন, গোপাল সিংহ তাহার রাজধানীতে ১৭৪০ খ্ৰীষ্টাব্দে একটা সুন্দর মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিয়াছিলেন। মদনমােহনের এই প্রাচীন মন্দিরটীি নদীকূলে উচ্চমূত্তিকাস্তুপের উপর স্থাপিত, এখন ইহার আর সে প্রাচীন সৌন্দৰ্য্য নাই-তথাপি ইহার ভগ্ন ও শ্ৰীহীন সৌন্দৰ্য্যের ধ্বংসাবশেষ বিশেষ રે જેરે