পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । কীৰ্ত্তি। মন্দিরে প্রবেশের সম্মুখস্থ বৃহৎ ফটক উত্তীর্ণ হইলেই প্রস্তর মণ্ডিত আঙ্গিনার পার্শ্বে প্রস্তর সোপানাবলি শোভিতা পুষ্করিণী বা দীর্ঘিকা বিরাজমানা। এই সুপ্ৰশস্ত আঙ্গিনার পরে একটু পর পর আরও দুইটী অত্যুচ্চ প্ৰাচীন সিংহদ্বার অতিক্ৰম করিলে তবে দেবালয়ের সম্মুখস্থ প্রাঙ্গণে পহুছিতে পারা যায়। এই সিংহদ্বার দুইটার কারুকাৰ্য্য পৰ্য্যবেক্ষণ যোগ্য। এককালে যে ইহা অত্যন্ত সুন্দর ছিল—বৰ্ত্তমান কারুকাৰ্য্যের চিহ্ন সমূহ হইতে তাহা বিশেষরূপে উপলব্ধি করিতে পারা যায়। দেবালয়ের সম্মুখস্থ প্ৰাঙ্গণে চির বিশ্রুত “সোনার তালগাছ” দর্শন করিলাম। শৈশবে ঠাকুরমা দিদিমার নিকট ও তীর্থ প্রত্যাগত প্রাচীন ব্যক্তিগণের নিকট নানা সুমধুর শব্দবিন্যাসের সহিত যাহার মনোহর বর্ণনা শুনিয়া শুনিয়া হৃদয়ে একটা পরিপুষ্ট বৃক্ষ বলিয়া মনে করিয়াছিলাম এখন নয়নসমক্ষে তাহা দেখিয়া শৈশবের সেই কল্পনাঙ্কিত চিত্র অন্তহৃত হইয়া গেল। ইহাকে বৃক্ষ নামে অভিহিত না করিয়া স্তম্ভ নামে উল্লেখ করিলেই ঠিক হইত। বৃক্ষের অবয়বের সহিত ইহার কোনও রূপ সোসাদৃশ্য পরিলক্ষিত না হইলেও বহু অর্থ ব্যয় নিৰ্ম্মিত এই স্বর্ণ স্তম্ভ উল্লেখ যোগ্য ও দর্শন যোগ্য বটে । কাষ্ঠ। তদুপরি বস্ত্র ও তাহার পরে স্বৰ্ণ ; ( ধ্বজদণ্ড ইহার উপরে উঠিয়া নিশান দেওয়া হয় ) অর্থশালী যাত্ৰিগণ ইচ্ছা করিলে এই ধ্বজ পরিবর্তন করিয়া দিতে পারেন । তাহা অর্থসাপেক্ষ । দেবালয় নিৰ্ম্মাণেও বহু অর্থ ব্যয়িত হইয়াছে । সর্বত্রই শ্বেত প্ৰস্তরের ছড়াছড়ি । এই সুবৃহৎ মন্দিরের দুই পাশ্বের দুইটী সুদীর্ঘ কক্ষে শ্ৰীশ্ৰীকৃষ্ণের নৃসিংহ মূৰ্ত্তি, সুদর্শনচক্রের সাকাররূপ, শেঠের কুলগুরুর ও রাম, লক্ষমণ, ভরত, শত্রুঘ্ন প্রভৃতির শিলাময় মূৰ্ত্তি সংস্থাপিত আছে। শেঠজীর এই দেব নিকেতনের মধ্যেও যথারীতি দুই বেলা কাছারী হইয়া থাকে, কারণ এখানেও দেবালয় সম্বন্ধীয় যাবতীয় কাৰ্য্য নির্বাহাৰ্থ বহু ভৃত্য ও পরিচারক ব্ৰাহ্মণ আছেন। বৃন্দাবনের ন্যায় আর কোথাও তীর্থ যাত্ৰিগণের সুবিধা নাই, কারণ এখানে কোনও বিগ্ৰহ দেখিতেই কোনও রূপ অর্থ দৰ্শনী দিতে হয় না। এই সমুদয় বিগ্ৰহ স্বামীগণ দেব দেবীর সেবার নিমিত্ত ও দীন দরিদ্রকে দান ও ভোজনের জন্য প্রচুর অর্থ কিংবা কোন কোন স্থানে জমিদারীও লিখিয়া ܛܒܪܝ