পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । শুনিলাম, উহা ভরতপুর-যুদ্ধজয়ী রাজা রণজিৎ সিংহের সমাধি-মন্দির। লর্ড লেকের ভীষণ সৈন্যদল ও কামান-শ্রেণীর মুখ হইতে ইনিই কয়েকদিন দুর্ভ্যেন্ত দুৰ্গ রক্ষা করিয়াছিলেন। সমাধি-সৌধের পাশে দুইটী শোভাময় প্রস্তর বঁাধান কুণ্ড দেখিলাম। তন্মধ্যে যেটি ক্ষুদ্র, সেটিতে জল আছে, যেটি বৃহৎ সেটিতে জল নাই। পাণ্ডাঠাকুর ব্যাখ্যা করিয়া দিলেন, রাসমণ্ডলে নৃত্যের পর নটবর কৃষ্ণচন্দ্র পিপাসাৰ্ত্ত হইয়া এই কুণ্ডের সমস্ত জল পান করিয়া ফেলিয়াছিলেন, তদবধি আর ইহাতে জল থাকে না। রণজিত সিংহের সমাধির পার্শ্বে ভরতপুরে জাঠিরাজ্য প্রতিষ্ঠাতা সূৰ্য্যমলের সমাধি-সৌধ দেখিলাম। পর্বতের উত্তর-পূর্ব কোণে ইহা অবস্থিত। এই প্রস্তরময়ী পুরীর সৌন্দৰ্য্য, পরিপাট্য এবং ভিত্তি-সংস্থান অতি সুন্দর, সুবিধাজনক এবং সুরুচির পরিচায়ক। পাথরের কারুকাৰ্য্যগুলি শিল্পীর সূক্ষমযন্ত্র চালনায় এত পরিস্ফুট ও শোভাময় হইয়া আছে যে, আধুনিক অট্টালিকা না হইলে, লোকে হয়ত ইহাকে বিশ্বকৰ্ম্মার নিৰ্ম্মিত বলিত। প্ৰধান সমাধিমন্দিরের চারিদিকে রাজ-পরিবারের আরও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমাধি আছে। এই সকল সমাধির পাদমূলে স্বচ্ছ সলিলপূর্ণ নাতি বৃহৎ সরোবর উৎখাত । অন্যদিকে সুবিন্যস্ত উদ্যান । আগ্রা, বৃন্দাবন, মথুরার প্রাচীন কীৰ্ত্তিগুলি যে লাল পাথরে গঠিত এবং আধুনিক মন্দিরগুলি যে ধূসর বর্ণের বেলে পাথরে গঠিত সুরজমলের সমাধি সে সকল পাথরে নিৰ্ম্মিত নহে । ইহা একপ্ৰকার নিম্নশ্রেণীর সাদা পাথরে গড়া। পাথরের নাম শুনিলাম রূপবাস। সূৰ্য্যমলের সমাধি যেখানে, ঠিক তাহার উপর ভগবানের চরণ-চিহ্নযুক্ত মৰ্ম্মর প্রস্তরখণ্ড আছে এবং চরণ-চিহ্নের চতুষ্পার্শ্বে সুদৰ্শন চক্ৰ, নৃমুণ্ড, তরবারি এবং বনমালা চিহ্নও খনিত আছে । এ সকল সমাধির নিম্নে কাহারও দেহ সমাহিত নয়। যে ষে স্থানে রাজাদিগের দেহ দাহ করা হইয়াছিল, সেই দাহ-স্থানের উপর এ সকল সমাধি নিৰ্ম্মিত । শশানে দাহ্যস্থানের উপর চৈত্য নিৰ্ম্মাণ, বৃক্ষাদি প্ৰতিষ্ঠা হিন্দুর অতি প্ৰাচীন পদ্ধতি, কিন্তু এইরূপ সমাধি-সৌধ নিৰ্ম্মাণ মুসলমান সংস্রবের অবিমিশ্রফল। সমাধি -সৌধগুলির এক পার্শ্বে বলদেবের মন্দির এবং এক পার্শ্বে শ্ৰীকৃষ্ণের ФУ е