পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কালপুত্র। ৰচণনপুর উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের একটা প্রধান জেলা ও নগর। ইহা পুণ্যতোয় গঙ্গানদীর দক্ষিণকূলে অবস্থিত। কানপুর প্রাচীন নগরী নহে, কাজেই এখানে দেখিবার মত প্রাচীন অট্টালিকা ও দুর্গাদি কিছুই নাই। বৰ্ত্তমান সময়ে ইহা ইংরেজরাজের একটী প্ৰধান স্কন্ধাবার বা মিলিটারী ষ্টেশন। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইহা চতুর্থ নগর—প্ৰয়াগ-সঙ্গম হইতে ১৩০ মাইল দূরে এবং সমুদ্রগর্ভ হইতে ৫০০ ফুট উদ্ধে অবস্থিত। রেল ষ্টেশনে পহুছিয়াই আমরা শীঘ্ৰ নগরাভিমুখে অগ্রসর হইলাম, শুনিলাম ষ্টেশন হইতে নগর প্রায় দুই মাইল দূর হইবে। দর্শনীয় স্থান-সমূহের মধ্যেসৈনিকাবাস, সিপাহী-বিদ্রোহের স্মৃতি-নিদৰ্শন-উদ্যান, গঙ্গার পয়-প্ৰণালী ইত্যাদিই বিখ্যাত। কানপুরের নামোৎপত্তি শ্ৰীকৃষ্ণের মধুমাখা হিন্দী নাম কাহ্নাই (কানাই ) বা কাহ্ন। কানু) হইতে হইয়াছে—সেকালের “কাহ্নপুর'ই এখন বৰ্ত্তমান ‘কানপুরে পরিণত হইয়াছে। সিপাহী-বিদ্রোহের পৈশাচিক অত্যাচার-চিহ্ন,-নির্দোষ ইংরেজ নরনারীর শোণিতরেখা এখনও ইহার | সৰ্বাঙ্গে বৰ্ত্তমান থাকিয়া অৰ্দ্ধশতাব্দীর একটা ভীষণ নৃশংসতার কাহিনী আজিও জাগাইয়া রাখিয়াছে। কানপুর ইংরেজের হৃদয়ে ভীষণ শোকের উদ্দীপন করিয়া থাকে। সেই জন্য ইংরাজরাজ এই নৃশংসতার ইতিহাস চিরজাগারুক করিবার জন্য ঘটনাস্থানগুলিতে উষ্ঠান, স্তম্ভ, প্রস্তরপ্রতিমা প্রভৃতি স্থাপন করিয়াছেন। আমার এই স্মৃতি-নিদর্শনগুলি সম্বন্ধে ধারণা। কিন্তু অন্যরূপ ; —আমার মনে হয়, সৎকীৰ্ত্তির নিদর্শনেই হৃদয় প্রশান্ত ও প্রশস্ত হয়, মন সৎপথে ধাবিত হয়, কিন্তু মনুষ্যতার অবনতির পরিচায়ক বর্বরতার, নিষ্ঠুরতার, পাপের নিদর্শন এতটা জ্বলন্ত করিয়া জাগাইয় রাখিলে পাপে ঘূণাবৃদ্ধি অপেক্ষা মনুষ্যত্বের উপর ঘূণা, এক জাতির প্রতি অন্য জাতির, চিরদ্বেষ আনিয়া ফেলে। ভবিষ্যদ্বংশীয়দিগের জন্য এরূপ নিদর্শন উপকার অপেক্ষ অপকারের মাত্র বেশী করে বলিয়াই আমার বিশ্বাস। কানপুরের