পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

! এটোয়া । এবং তাহার তটদেশে কতকগুলি শিবমন্দির বিরাজিত । এটোয়ার দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে একটা ভগ্ন দুর্গ, হিউমস্কুল, বারদ্বারী ও জুমা মসজিদ প্রভৃতি বিখ্যাত। প্ৰথমেই দুর্গ দেখিতে গমন করিলাম। দুর্গটি অতিশয় প্রাচীন। ইটাওয়া নগর ক্ষুদ্র হইলেও প্ৰাচীন-স্মৃতি-বিজড়িত। কথিত আছে যে, প্ৰায় আটশত বৎসর পূর্বে সোমটিনামক একজন নৃপতি এই দুৰ্গ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। যমুনার তীরে একটী উচ্চ স্থানের উপর সেই প্ৰাচীন কেল্লা অবস্থিত। রৌদ্রের প্রখর-কিরণে চারিদিক ঝলসিত হইয়া উঠিয়াছিল,-নিৰ্জন পথে, রৌদ্রের উত্তাপে দগ্ধদেহে উচ্চ স্থানে উঠিলাম, চারিদিকে জনমানবের চিহ্নও নাই ; সব স্তব্ধ, সব নীরব, রৌদ্র খা খাঁ করিতেছে, নিৰ্জন পরিত্যক্ত স্থানটি খাঁ খ্যা করিতেছে! আমরা স্বেদসিক্ত কলেবরে ভগ্নদুর্গের নিকট পহুছিলাম। এক সময়ে যে ইহা সুন্দর ও সুদৃঢ় ছিল তাহা বৰ্ত্তমান ভগ্নাবস্থা হইতেও বেশ বুঝিতে পারা যায়। এখান হইতে যতদূর দৃষ্টি চলে কেবল উচ্চ মৃত্তিকা স্তুপ ব্যতীত আর কিছুই দৃষ্ট হয় না। ঘুরিয়া ফিরিয়া অবশেষে একটা ভগ্নপ্রাচীরের নিকট উপনীত হইলাম। কত ঐতিহাসিক তত্ত্ব যে এই প্ৰাচীরের গাত্রে অঙ্কিত রহিয়াছে, তাহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। প্রাচীরের পার্শ্বস্থ সংকীর্ণ পথ দিয়া ঘুরিতে ঘুরিতে একটী প্ৰাচীন ভগ্নোম্মুখ দুৰ্গদ্বারের নিকটে পহুছিলাম। স্থানীয় কিম্বদন্তী এইরূপ যে, পূর্বে এই দুর্গদ্বারের উপর একটা প্ৰস্তর নিৰ্ম্মিত বিকট মনুষ্যবাদন স্থাপিত ছিল, হিন্দুগণ উহাকে নানা দুৰ্দশা জন্মাইতে সক্ষম ভাবিয়া ভয়, ভক্তি ও শ্রদ্ধা করিত এবং সিন্দর তৈলে সিক্ত করিয়া তাহার অৰ্চনা করিত। এই দুৰ্গদ্বার উত্তীর্ণ হইয়া আমরা দুর্গের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত বারদ্বারী নামক একটী ক্ষুদ্ৰ ইষ্টকালয় সমক্ষে উপনীত হইলাম। এই দালানটীর কেন যে “বারদ্বারী’ নাম হইল বুঝিতে পারিলাম না, কারণ আমরা গণনা করিয়া দশটার বেশী দ্বার পাই নাই। বারদ্বারীর সৌধটিকে কিন্তু খুব প্রাচীন বলিয়া বোধ হইল না। এ স্থান হইতে চারিদিকের সৌন্দৰ্য্য বড়ই মনোরম প্ৰতীয়মান হয়। উদ্ধে অনন্তনীলগগন —সীমাহীন, লক্ষ্যহীন, প্রশান্ত, উদার আর নিক্সে নগর মধ্যে সবুজ-সুন্দর বৃক্ষাবলী ও ইতস্ততঃ অবস্থিত সৌধু-নিচয়ের ধবল চুড়া বড়ই মনোহর 8SR t ' )