পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরী বা জগন্নাথ । দাতা, নির্বাণ মুক্তির কৰ্ত্তা স্বয়ং ভগবান এখানে দারুব্ৰহ্মরূপে বিরাজ । করিতেছেন। এখানে ব্ৰাহ্মণ, চণ্ডাল, রাজা মহারাজ সকলই এক, এই নিমিত্তই লক্ষ লক্ষ যাত্রী, ধন, প্ৰাণ তুচ্ছ করিয়াও এই পুণ্য তীর্থে আগমন করিয়া থাকে। ব্ৰহ্মপুরাণ, নারদপুরাণ, স্কন্দপুরাণ, পুরুষোত্তমপুরাণ, উৎকল খণ্ড প্ৰভৃতি বহু পুস্তকে সংস্কৃত ভাষায় ও উৎকল ভাষায় লিখিত মাগুনিয়াদাস ও শিশুরামকৃত ক্ষেত্রপুরাণ ও মহাদেব দাসকৃত নীলাদ্রিমহোদয় প্রভৃতি গ্রন্থে জগন্নাথদেব ও জগন্নাথ ক্ষেত্রের মাহাত্ম্যাদি । বিস্তারিতরূপে বৰ্ণিত আছে। পৌরাণিক গ্রন্থে জগন্নাথদেবের উৎপত্তি সম্বন্ধে নানারূপ মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। যে বৃত্তান্তটি সমধিক প্রচলিত আমরা এস্থানে সংক্ষেপে তাহার উল্লেখ করিলাম। অতি পূর্বকালে ইন্দ্ৰদ্যুম্ন নামে বিষ্ণুভক্তি পরায়ণ এক নরপতি ছিলেন, তিনি কোন তীর্থ গমন করিয়া এবং কিরূপে বিষ্ণুর আরাধনা করিবেন সে জন্য অস্থির হইয়া পড়িলেন, মনে মনে বহু তীর্থের কথা চিন্তা করিলেন বটে। কিন্তু কোন তীর্থই তাহার মনের মত হইল না । অবশেষে তিনি পুরুষোত্তম তীর্থে আগমন করিলেন । এস্থানে আগমন করিয়া ইন্দ্ৰদু্যক্ষ ইহার নৈসৰ্গিক সৌন্দৰ্য্যে মুগ্ধ হইয়া একটী প্ৰাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিলেন ও অশ্বমেধ যজ্ঞাদি করতঃ ব্ৰাহ্মণদিগকে ভূমিদান ইত্যাদি পুণ্যকৰ্ম্ম সম্পাদন করিলেন, কিন্তু নিৰ্ম্মিত প্ৰাসাদ মধ্যে কি মূৰ্ত্তি স্থাপন করিবেন তাহা ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিলেন না । আহার নিদ্রা পরিত্যাগ পূর্বক দিবা রাত্রি এক মনে বিষ্ণুর ধ্যান ও মূৰ্ত্তি স্থাপন বিষয়েই চিন্তা করিতেন, এক দিবস এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে কুশাসনোপরি ঘুমাইয়া পড়িলেন। নিদ্রাবস্থায় স্বপ্নে স্বয়ং ভগবান তঁহাকে দর্শন দিয়া বলিলেন যে “কল্য প্ৰভাতে সূৰ্য্যোদয়ের পর তুমি স্বয়ং একখানা কুঠার হস্তে সমুদ্র তীরে জল ও স্থল মধ্যে যে বৃক্ষ দেখিতে পাইবে তাহা একাকী ছেদন করিয়া আনয়ন করিবে ও তদ্বারা আমার প্রতিমা প্ৰস্তুত করাইয়া মন্দির মধ্যে স্থাপন করিবে ।” ঈপিসত প্ৰাৰ্থন જૂર્વ হওয়ায় পরদিন প্ৰত্যুষে ইন্দ্ৰদ্যুম্ন প্ৰফুল্ল চিত্তে সমুদ্র তীরে গমন করিয়া বিস্মিত নেত্রে দেখিলেন যে | 8 OG