পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । চলিয়া যাইতে লাগিল, ইন্দ্ৰদ্যুম্ন স্বকীয় মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হইবে বলিয়া আশায় প্ৰফুল্লিত-পনের দিন অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। এক দিবস রাজার প্ৰধান মহিষী গুণ্ডিচা রাজাকে কহিলেন “প্রিয়তমা! তুমি আমায় জগন্নাথ দেবের মূৰ্ত্তি দেখাইবে বলিয়াছিলে, কই আজিও ত দেখাইলে না! তাহাতে ইন্দ্ৰদ্যুম্ন সূত্ৰধর ঘটিত সমুদয় বৃত্তান্ত বিবৃত করিল। রাণী হাসিয়া উত্তর করিলেন “তুমিও যেমন! এ আবার একটা কথা, বহু সূত্ৰধর সম্মিলিত হইয়া যে কাৰ্য্য সম্পন্ন করিতে পারিল না, একটা বৃদ্ধ কিরূপে তাহা করিবে ? বােধ হয় বৃদ্ধ এতদিনে মন্দির মধ্যে অনাহারে মরিয়া গিয়াছে।” রাজার হৃদয়ে রাণীর উক্তিতে সন্দেহের উদয় হইল, তিনি রাণীর কথা অযৌক্তিক বলিয়া বোধ করিলেন না । মন্ত্রী সমভিব্যহারে মন্দির নিকটে উপস্থিত হইয়া দ্বারের নিকট কাণ পাতিয়া কোনওরূপ যন্ত্রের শব্দ শুনিতে না পাইয়া ভাবিলেন যে রাণীর উক্তিই যথার্থ, নিশ্চয়ই বৃদ্ধ সূত্ৰধর অনাহারে মন্দির মধ্যে প্ৰাণত্যাগ করিয়াছে। ইহা মনে করিয়া মন্দির দ্বার খুলিতে অগ্রসর হইলেন, মন্ত্রী পুনঃ পুনঃ নিষেধ করিলেন। কিন্তু রাজা কোনওরূপ বাধা না মানিয়া মন্দিরের দ্বার খুলিয়া ফেলিলেন, কিন্তু একি ! কোথায় বৃদ্ধ ? মন্দিরের মধ্যে কোন জনপ্রাণীই নাই, বিস্ময়াকুল নেত্ৰে দেখিলেন যে সিংহাসনোপরি দারুব্ৰহ্ম জগন্নাথ মূৰ্ত্তি বিরাজমান, কিন্তু তাহার হাত ও আঙ্গুল ইত্যাদি কিছুই নাই। রাজা ইহাতে যারপরনাই শোকাকুল হইয়া পড়িলেন, তাহার নিজ দোষেই যে এইরূপ অঘটন ঘটিয়াছে তাহা নিশ্চিতরূপে বুঝিতে পারিয়া আরও অধিক মৰ্ম্মাহত হইয়া পড়িলেন। শেষে মনের দুঃখে কুশশষ্য রচনা করিয়া শুইয়া রহিলেন । অৰ্দ্ধ রাত্রি অতীত হইলে স্বপ্নে দেখিতে পাইলেন যে স্বয়ং জগন্নাথ দেব তাহাকে আসিয়া বলিতেছেন, “বৎস! তুমি দুঃখিত হইও না, তোমার চিন্তার কোনও কারণ নাই, কলিযুগে আমি হস্তপদবিহীন বুদ্ধ রূপেই থাকিব, তুমি পরিশেষে স্বর্ণ দ্বারা আমার হস্ত পদ গড়াইয়া দিও।” মাগুনিয়া দাসের লিখিত “ক্ষেত্রপুরাণে” এ বিষয়ে লিখিত আছে যে ;— iኔ “মুই বউদ্ধ রূপ হই। কলিযুগরে ঘিবু রহি। so