পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিদ্ধপীঠ । এই মহাবেদীর উপরে প্রথমে দক্ষিণদিকে বলরাম, তাহার পরে, স্বভদ্র এবং তৎপরে শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেবের মূৰ্ত্তি অধিষ্ঠিত। এ সকল । মূৰ্ত্তির সম্মুখে সুন্দর সুগঠিত স্বর্ণ নিৰ্ম্মিত লক্ষনীমূৰ্ত্তি, রৌপ্যবিনিৰ্ম্মিত । বিশ্বধাত্রী মূৰ্ত্তি ও পিত্তলের মাধব মূৰ্ত্তি আছে। জগন্নাথদেবের মূৰ্ত্তি ও : অন্যান্য প্রধান ত্ৰিমূৰ্ত্তি স্নানযাত্রা ও রথোৎসব ব্যতীত অন্য কোনও উপলক্ষে বাহিরে আনা হয় না। দিবসের বিভিন্ন সময়ে দেবমূৰ্ত্তির বিভিন্ন প্রকারের - দেবতা সম্পর্কিত শিঙ্গার বা বেশ হয়। প্ৰাতঃকালে মঙ্গল-আরতি- | 夺时1 শিঙ্গার, তাহার কিঞ্চিৎ পরে অবকাশ-শিঙ্গার, দ্বিপ্রহরের সময় প্রহর-শিঙ্গার সন্ধ্যার কিঞ্চিৎ পূর্বে চন্দন-শিঙ্গার ও সন্ধ্যার পরে বড়-শিঙ্গার হইয়া থাকে। কোন কোন সময় দামোদর, বামন প্ৰভৃতি বেশও হইয়া থাকে। প্রতিদিন দেবতার অৰ্চনা প্ৰভৃতি কিরূপ ভাৰে সম্পন্ন হয়। এ স্থানে তাহাও উল্লেখ করিলাম। সর্বপ্রথমে জাগরণ, তখন দুন্দুভি ধ্বনি হয়, তৎপর মঙ্গল আরতি, মঙ্গল আরতির পরে দন্তকাষ্ঠ প্ৰদান, বস্ত্ৰ পরিধান, বালভোগ ইত্যাদি সকল প্রকারের ভোগ প্রদত্ত হয়। বালভোগে খাই, ননী, দধি, নারিকেল, আর সকাল ভোগে খোচরান্ন ও পিষ্টকাদি দেওয়া হয়। সকাল ভোগের পরে অন্ন-ব্যঞ্জনাদি দিয়া দ্বার বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়,-এই ভোগকে দ্বিপ্রহর ভোগ কহে। পরে বেলা চারি ঘটিকার সময় নিদ্রাভঙ্গ হইলে জিলাপি ভোগ, তৎপরে নানাপ্রকার মিষ্টান্নযুক্ত সন্ধ্যা ভোগ ও তাহার পরে বড়-শিঙ্গার ভোগ হইয়া থাকে, এই সময়ে “গোপবল্লভ” নামে রাজবাটী হইতে এক প্রকার মিষ্টান্ন আসে ও তাহাদ্বারা ভোগ হয়। প্রত্যেকবার ভোগ দেওয়ার পূর্বেই পূজা ও যথারীতি আরতি হয়। জগন্নাথদেবের উদ্দেশে যে কোনও প্রকার ভোগ দেওয়া হয় তাহাকেই মহাপ্ৰসাদ কহে । এই মহাপ্ৰসাদের জন্যই এই স্থানের বিশেষ খ্যাতি। ইহার এমনি মাহাত্ম্য যে জাতিভেদের কঠোরতা দূরে রাখিয়া বিশেষ সমাদর ও ভক্তির সহিত ইহা সকলেই এক সঙ্গে গ্ৰহণ করেন। এখানে ব্ৰাহ্মণ, চণ্ডাল সকলে । একত্র व्यांशंब्रांनि করিতে পারে, দারুরূপী পরম ব্ৰহ্মের নিকট জাতিভেদের সংকীর্ণতা থাকিতে পারে না, ছোট, বড়, ধনী, নির্ধন, আচণ্ডাল সকলেই তাঁহার সেবার অধিকারী।