পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ। বেদী, লিঙ্গের চতুর্দিক স্বর্ণ পত্রের দ্বারা মণ্ডিত-—এক দিকে বেদী প্ৰদীপের মুখের ন্যায় সরুভাবে নিৰ্ম্মিত । দিবা রাত্রি লিঙ্গের চারিধারে প্রদীপ প্ৰজ্জ্বলিত থাকে। পাণ্ডারা ভুবনেশ্বর দেবকে হরিহর বলিয়া থাকেন এবং লিঙ্গরাজের শিরোদেশস্থ শুভ্ৰ রেখাকে শ্ৰীকৃষ্ণের সহিত রাজতগিরি-সন্নিভ দেবাদিদেব মহাদেবের মিলন প্রতিপন্ন করিতেছে এইরূপ ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন। ভুবনেশ্বরের গাত্ৰস্থ কয়েকটি রেখাকেও ইহারা গঙ্গা যমুনার সিত ও অসিত প্ৰবাহ-ধারা বলিয়। বৰ্ণনা করেন। পাণ্ডাদের এই উক্তি হইতে উহা সম্যকরূপে বিশ্বাসযোগ্য না হইলেও ইহা আশ্চর্য্যের ও সাম্যের বিষয় বটে যে ভুবনেশ্বরের ন্যায় শৈব-প্রধান তীর্থ স্থলেও বিষ্ণুর বাসুদেব মূৰ্ত্তির পূজা বিশেষ সমারোহের সহিত সুসম্পন্ন হয়। ভুবনেশ্বর দেবের পূজা পদ্ধতি অতি সুন্দর ও সহজ । গঙ্গাজল, দুগ্ধ এবং সিদ্ধিই তাহার অৰ্চনা করিবার প্রধান উপকরণ । ভক্তগণ স্থূপীকৃত সঞ্চিত বিল্বপত্র ও পুষ্প দ্বারা দলে দলে সমবেত হইয়া যখন ভক্তি গদগদ চিত্তে সেই পরম পুরুষের অৰ্চনার জন্য বদ্ধাঞ্জলি হইয়া পাপক্ষালনের নিমিত্ত মন্ত্র পাঠ করিতে থাকে- তখন হসন্দয়ে এক সুমহান শান্তি ও পবিত্ৰতার উদয় হয়। শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেবের পূজার ন্যায় লিঙ্গরাজেরও পূজা হয়— সেই মঙ্গলারাতি, স্নান, বস্ত্রপরিধান, বাল্য ভোগ, মধ্যাহ্ন ভোগ ইত্যাদি দ্বাবিংশতি প্রকারের নৈমিত্তিক অনুষ্ঠান একরূপই হইয়া থাকে। এ স্থানে ইহাকে দ্বাবিংশ ধূপ কহে । জগন্নাথদেবের পূজার সহিত ইহার পূজার পদ্ধতির যেরূপ সাদৃশ্য দৃষ্ট হয় - তদ্রুপ ভুবনেশ্বরের উৎসব সমূহকেও “যাত্ৰা” কহে । এইরূপ যাত্রার সময়ে ভুবনেশ্বর দেবের প্রতিনিধি চন্দ্ৰশেখরের পিস্তল নিৰ্ম্মিত মূৰ্ত্তি দ্বারাই বিশেষ ধূমধামের সহিত উৎসবাদি সম্পাদিত হইয়া পাকে । দাক্ষিণাত্যের দেবমন্দির সমূহের ভোগমূৰ্ত্তির সহিত ইহার সোসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। শিবরাত্রি উপলক্ষেই ভুবনেশ্বরে বহু যাত্র সমাগম হষ্টয়া থাকে- সে সময়ে ভারতের বিভিন্নাংশ হইতেও অনেক তীর্থযাত্রী এখানে আগমন করেন । আষাঢ় মাসে এখানেও রথযাত্ৰা হয় এবং তাহা ছাড়া চৈত্র বা বৈশাখ মাসে অশোকাষ্টমীর দিনেও এ স্থানে রথযাত্রা হইয়া থাকে । পুরীতে যেমন বৈশাখ মাসে চন্দন-যাত্রা 8&