পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

93.5-axe . পীড়াগ্রস্থ হওয়া যে কতদূর কষ্টকর এবং যন্ত্রণাদায়ক তাহা ভুক্তভোগী ব্যক্তি মাত্রেই বুঝিত সক্ষম হইবেন । আমাদের বিনীত অনুরোধ যে তীর্থযাত্ৰিগণ যেন একটু সংযত ও নিজ শরীরের প্রতি ও আহারাদি সম্পর্কে একটু মনোযোগী হইয়া চলেন, দেবপ্ৰসাদের প্রতি ভক্তি করিতে হইবে বলিয়া যে তিন চারিদিনের বাসি প্ৰসাদ গ্ৰহণ করিতে হইবে ইহা আমরা কোনরূপেই যুক্তিসিদ্ধ বলিয়া বিবেচনা করিতে পারি না । ভুবনেশ্বরে খাদ্য দ্রব্যাদির বড়ই অসুবিধা, যাহা মিলে তাহাও বাঙ্গালী ভ্ৰমণকারিগপেন্ন পক্ষে ও তীর্থযাত্ৰিগণের পক্ষেও বিশেষ অসুবিধাজনক । যাত্ৰিগণ সাধারণতঃ প্ৰসাদের উপরই নির্ভর করিয়া থাকেন ; এস্থানে প্ৰসাদকে “পকাল।” কহে-- এই পকাল ‘প্ৰসাদ” অন্ন, দধি ও মিষ্টান্ন মিশ্রিত করিয়া তৈরী করিয়া থাকে । ইহার আস্বাদন নিতান্ত মন্দ নহে । এ স্থানের কোরা নামক রসিকরা দেখিতে যেমন শুভ্ৰ খাইতেও তদ্রুপ সুস্বাদু। ভুবনেশ্বরের দ্রষ্টব্য স্থান সমূহ দর্শনান্তে তৎপর দিবস অতি প্ৰত্যুষে আমরা বৌদ্ধযুগের কীৰ্ত্তিস্তম্ভ পরিপূর্ণ “খণ্ডগিরি ও উদয়গিরি” দর্শন করিতে যাত্ৰা করিলাম। অনেক দিন হইতেই প্রাচীন বৌদ্ধযুগের এ সকল সুন্দর সুন্দর গুস্ফা প্রভৃতি দর্শন করিবার ইচ্ছা ছিল—আজি এতদিন পরে ভগবৎ কৃপায় সে বাসনা পূর্ণ হইতে চলিল কাজেই হৃদয়ে অপূৰ্ণ আনন্দ অনুভব করিতেছিলাম। ভুবনেশ্বর হইতে খণ্ডগিরি ও উদয়গিরি এই ক্ষুদ্র শৈল দুইটা উত্তর পশ্চিমদিকে প্ৰায় ৪/৫ মাইল দূরে অবস্থিত। নবোদিত অরুণের লোহিত কিরণ সম্পাতে প্ৰকৃতি সুন্দরীকে সেই মাঘের প্রভাতে আতিশয় মনোরম বলিয়া বোধ হইতেছিল। আমাদের গো-যান মাঠের মধ্যস্থ পাকারাস্তা দিয়া চলিতে লাগিল,—দুই পার্শ্বে দিগন্ত বিস্তৃত গ্ৰাম্য মাঠ—অতি দূরে কোথাও বা গ্রামের ধূসর রেখা আকাশের শেষ প্রান্তে মিলাইয়া গিয়াছে। দূরে দূরে দুই একটী ছোট পাহাড় মাথা উচু করিয়া দর্শকগণকে যেন বলিতেছে একবার আমায় দেখনা ভাই, আমি উহার চেয়ে কত সুন্দর । রাস্তার পার্শ্বে কোথাও বা আম বাগান ; শীতকালেই ওড়িষ্যায় বসন্তের আবির্ভাব বলিয়া মনে হইতেছিল। আমের মুকুল-সৌরভে চতুৰ্দিক সুরভিত । রাস্তাটা জনমানবহীন বলিলেও অত্যুক্তি হয় না, কচিৎ দুই একটী 8ઝર