পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭

loyo আমার তৃপ্তির কারণ ছিল। এ গ্ৰন্থ-প্ৰকাশের কল্পনা একজন মহীয়সী মহিলার অনুরোধে আমার হৃদয়ে সর্বপ্ৰথমে জাগরিত হয়। ময়মনসিংহ গৌরীপুরের প্রসিদ্ধ জমিদার শ্ৰীমান ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর জননী, দানশীল শ্ৰীযুক্ত বিশ্বেশ্বরী দেবীচৌধুরাণী আমাকে বহুবার এ বিষয়ে অনুরোধ করেন—তাহার সে অনুরোধ আমার নিকট অসঙ্গত বলিয়া মনে হয় নাই—অতঃপর বন্ধুবান্ধব র্যাহাদের নিকট এ কথা বলিয়াছি, তাহারা সকলেই ঐ মন্তব্যের সারবত্তা অনুভব করিয়া আমাকে এবিষয়ে উৎসাহিত করেন, তাহাদের সে উৎসাহে উৎসাহিত হইয়াই অদ্য এই ভ্রমণ-কাহিনী প্রকাশে সমর্থ হইলাম । যে ভারতবর্ষ সুদূর অতীত হইতে বর্তমান কাল পৰ্য্যন্ত নানা প্রকার কৃত্রিম ও অকৃত্ৰিম সৌন্দৰ্য্যে গঠিত, যাহার নানাবিধ সৌন্দর্য্যের বাৰ্ত্ত জগতের বিভিন্নাংশের অধিবাসীবৃন্দের নিকট স্বৰ্গলোকের ন্যায় অপূৰ্ব্ব বলিয়া পরীকীৰ্ত্তিত হইয়া আসিতেছে— সেই দেশের অধিবাসী হইয়াও আমরা তাহাকে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করিবার চেষ্টা ও যত্ন হইতে বঞ্চিত ! একটা কথা আছে যাহা নাই ভারতে-তাহা নাই জগতে”, যিনি ভারতের বিভিন্নাংশ পৰ্যটন করিয়াছেন তিনিই এ উক্তির সারবত্তা ঈদয়ে অনুভব করিবেন। এমন সুন্দর দেশ জগতে কোথায় ? তুষার কিরীট-শোভিত হিমালয়ের বিরাট বিপুল সৌন্দৰ্য্য—জাহ্নবী, কাবেরী, সিন্ধু, গোদাবরী, যমুনা, ব্ৰহ্মপুত্ৰ প্ৰভৃতি নদনদীর বক্ৰগতি, রাজত শুভ্ৰ—সলিল শোভা, দিগন্ত-বিস্তৃত অরণ্যানী, প্রাচীনের পরিত্যক্ত ঐতিহাসিক তীর্থস্থলসমূহের কঙ্কাল চিহ্ন, এক অব্যক্ত মহিমায় ভারতবর্ষকে জগতের নিকট বিধাতার সৃষ্টি-গৌরব-স্বরূপ বিরাজমান রাখিয়াছে। এত বিভিন্ন প্রকারের সৌন্দৰ্য্য, এত বিভিন্ন প্রকারের জল বায়ু, এত বিভিন্ন প্রকারের ভাষা, ধৰ্ম্ম, জাতি, আচারব্যবহার, রীতিনীতি আশ্চৰ্য্যরূপে এক ভাবতবর্ষে বিদ্যমান। সেই ভারতের অধিবাসী হইয়াও আমরা ভারতকে দেখিতে জানি না, সুদূর ইউরোপ আমেরিকার অধিবাসীবৃন্দ ভারতকে যে ভাবে অধ্যয়ন করিয়াছেন, আমরা তাহারি সুহকোলে লালিত পালিত হইয়া তৎসম্বন্ধে একেবারে অজ্ঞ । প্ৰমণ লোকের শিক্ষাকে মার্জিত ও উন্নত করে-উচ্চার দ্বারা বহু অপঠিত ইতিহাস পঠিত হয়-- চানেক নূতন শিক্ষা ও জ্ঞানের সঙ্গে অনেক বৃথা দম্ভ, অহঙ্কার ও সংকীর্ণত হৃদয় হইতে দূব হয়-ভ্ৰমণের শিক্ষা হৃদয়ে যেরূপ দৃঢ় রূপে মুদ্রিত হইয়া যায়-অন্য কিছুতেই তন্দ্ৰপ হয় না, অতএব ভ্রমণ-স্পাহা মানবমাত্রেরই থাকা অবশ্য কৰ্ত্তব্য । কত প্ৰাচীন সমৃদ্ধিশালী রাজবংশ, কত প্ৰাচীন সমৃদ্ধ নগরের এখন অস্তিত্ত্বও "নাই-সে সকল প্ৰাচীন প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস-সম্পর্কিত স্থানসমূহ দর্শনে যে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানলাভ হয়-তাহা গৃহকোণে বসিয়া থাকিলে কখনও আয়ত্ত হইতে পারে না।--ভারতবর্ষরূপ বিরাট গ্ৰন্থখানা অধ্যয়ন করিবার সামান্যতঃ ইচ্ছা -нfer ও ভ্ৰমণাত্নক্কপ ভাষা-পরিচয়ের মধ্য দিয়াই তাহার আরম্ভ छ् & ङg ।