পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Uto-use শেষ চলমা নামক শৃঙ্গেই শ্ৰীনিবাসদেবের মন্দির অবস্থিত। এই নিমিত্ত অনেকে এই গিরিশ্ৰেণীকেই শেষাচলমা নামে অভিহিত করিয়া থাকেন। এই পর্বতের অপর নাম ব্যস্কটু। স্কন্ধপুরাণান্তঃগত ব্যাঙ্কটাদ্রি মাহত্যুে ইহার বিবরণ এইরূপ লিখিত আছে যে, কোন এক সময়ে ভগবান বিষ্ণু কমলার সহিত অন্তঃপুরে ক্রীড়া কৌতুকে নিমগ্ন ছিলেন, পুরদ্বারে শেষনাগ দ্বার রক্ষায় নিযুক্ত ছিল। এইরূপ সময়ে বায়ু আসিয়া বিষ্ণুর দর্শনার্থ অন্তঃপুরে যাইতে চাহিল, শেষনাগ তাহাকে নিষেধ করায় বায়ু বলপ্রয়োগে অন্তঃপুরে যাইতে চাহিল, শেষনাগও তাঁহাকে বাধা প্ৰদান করিতে লাগিল ইহাতে পরস্পরের মধ্যে কলহ হয়, কমলা-পতি পুরদ্বারে এইরূপ কলহ শুনিতে পাইয়া বাহিরে আসিয়া কহিলেন “তোমরা বিবাদ করিতেছ। কেন?” পরে উভয়ের বক্তব্য শুনিয়া কহিলেন “জগতের মধ্যে বায়ুই সর্বাপেক্ষা বলশালী। বিষ্ণুর মুখে এই কথা শুনিয়া শেষনাগ বলিল “আমাদের মধ্যে কে বলবান প্রত্যক্ষ দর্শন করুন। আমি জাম্বুনন্দতটস্থ ব্যাঙ্কটগিরি বেষ্টন করিয়া থাকিব, বায়ু যদি আমাকে সে স্থান হইতে স্থানচ্যুত করিতে পারে, তবেই তাহাকে পৃথিবী মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট বলবান বলিয়া স্বীকার করিব, নচেৎ নয়।” শেষনাগ ব্যঙ্কটগিরি বেষ্টন করিয়া ধরিলে, বায়ু তাহাকে উড়াইয়া অৰ্দ্ধলক্ষ যোজন দূরে দক্ষিণ সমুদ্র হইতে ৩২ যোজন উত্তরে ও পূর্ব সমুদ্র হইতে পশ্চিম ভাগে সুবর্ণমুখীনদীর বামভাগে ফেলিয়া দিয়াছিল। শেষনাগ পরাজিত হইয়া নিতান্ত অপমানিত বোধ করেন এবং এই গিরিশৃঙ্গেই বহুদিন যাবত বিষ্ণুর তপস্যা করেন। তপস্যাতে বিষ্ণু পরিতুষ্ট হইয়া বর দিতে আগমন করিলে শেষনাগ বলিল “প্ৰভু! আপনি বৈকুণ্ঠে যেমন আমার কুণ্ডলে সর্বদা অবস্থিত আছেন, তদ্রুপ ব্যঙ্কট শৈলরূপ আমার দেহেও নিত্য বাস করুন। ভগবান ভক্তের কথায় সম্মত হইলেন এবং তদবধি শঙ্খ, চক্র হস্তে ব্যঙ্কট গিরিশেখরে বাস করি লাগিলেন। বিষ্ণু ব্যঙ্কটগিরির শিখরদেশে অবস্থিত আছেন বলিয়া’ইনি ব্যঙ্কটপতি নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। বরাহপুরাণানুসারে জ্ঞাত হওয়া যায় যে রঘুকুলতিলক শ্ৰী রামচন্দ্ৰ লঙ্কা-গমন সময়ে সদলে এই স্থানে আসিয়া “স্বামী তীৰ্থে” স্নানাদি করিয়াছিলেন। স্কন্ধপুরাণে আরও লিখিত পৌরাণিক কথা। G89