পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানে ছোট বড় বহুসংখ্যক সুন্দর সুন্দর বৌদ্ধমূৰ্ত্তি উঠিয়াছে, কোন কোন মূৰ্ত্তির গাত্রে প্রাচীন ও মধ্যযুগের গুপ্তাক্ষরে লিখিত উৎসর্গ-লিপি ইত্যাদি দেখিতে পাওয়া যায়। সারনাথের নিকটস্থ গ্রামবাসিগণ এ স্থানকে লক্ষ্য । করিয়া বলিয়া থাকে যে,--“নয় লাখ দেনেছে নয় কোটি মিলে গা ।” এ কথা একেবারে তাচ্ছিল্য করিবার নহে, কারণ দিন দিন যতই এ স্থান খোদিত হইতেছে, ততই নানা প্ৰকার প্রত্নতত্ত্ব-সম্পৰ্কীয় দ্রব্যাদি পাওয়া যাইতেছে। মহারাজা চেৎ সিংহের আমলে যে, এখান হইতে বহু ধন-রত্ন পাওয়া গিয়াছিল, সে কথা পূর্বেই বলিয়াছি—কে বলিতে পারে যে, এই রত্নগর্ভা মৃত্তিকার অভ্যন্তরে আরও বহু ধন-রত্নাদি প্রোথিত নাই ? এ স্থানের কিছুদূরে “ষাড়ঙ্গতাল” নামক একটা জলাশয়ও দৃষ্ট হয়। সারনাথের স্তুপ মাঠের মধ্যে অবস্থিত – অদূরেই বস্তি। লর্ড কজ্জনের কৃপায় এখানে একটা ক্ষুদ্র গৃহ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, পৰ্য্যটকদের বিশ্রাম করিবার জন্য একটি কক্ষ আছে, অপরটিতে এ পৰ্য্যন্ত যে সকল দ্রব্যাদি প্ৰাপ্ত হওয়া গিয়াছে, তাহার কতকাংশ সযত্নে রক্ষিত হইয়াছে। বৌদ্ধধৰ্ম্মের অভু্যুত্থানের সঙ্গে সঙ্গে দেশব্যাপী যে মহান একতার ভাব জাগিয়া উঠিয়াছিল, তাহ কে অস্বীকার করিবে ? বুদ্ধদেবের অভু্যদয়ে ভারত ধন্য হইয়াছে ! অমর বঙ্কিম সে সময়ের উন্নতির বিষয়ে ও জাতীয় একতার প্রতি লক্ষ্য করিয়া লিখিয়া গিয়াছেন “তখন বিশুদ্ধাত্মা শাক্যসিংহ অনন্তকালস্থায়ী মহিমা বিস্তার পূর্বক, ভারতাকাশে উদিত হইয়া দিগন্ত প্ৰধাবিত রবে বলিলেন, “** ** * তোমরা সবই সমান। ব্ৰাহ্মণ শূদ্র সমান। ১৮ ફ ફ’ বৈষম্য-পীড়িত ভারতে এ মহামন্ত্র শুনিয়া হিমগিরি হইতে মহাসমুদ্ৰ পৰ্য্যন্ত বিচলিত হইল। বৌদ্ধধৰ্ম্ম ভারতবর্ষে প্রচলিত হইল-বর্ণ-বৈষম্য কতকাদূর বিলুপ্ত হইল। প্ৰায় সহস্ৰ বৎসর ভারতবর্মে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রচলিত রহিল। পুরাবৃত্তজ্ঞ ব্যক্তিরা জানেন যে, সেই সহস্ৰ বৎসরই ভারতবর্মের প্রকৃত সৌষ্ঠবের সময়। যে সকল সম্রাট হিমালয় হইতে গোদাবরী পৰ্য্যন্ত যথার্থই এক ছত্ৰে শাসিত করিয়াছেন— অশোক, চন্দ্ৰগুপ্ত, শিলাদিত্য প্রভৃতি---এইকাল মধ্যেই তঁহাদের অভু্যদয়। এই সময়েই তক্ষশীলা হইতে তাম্রলিপ্ত পৰ্য্যন্ত বহুজনসমাকীর্ণ মহাসমৃদ্ধি Šა