পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৮৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয়নগর । আহবান করিতে লাগিলাম, সুন্দরী ভক্তবৎসলা, আমাদিগকে স্নেহদানে বঞ্চিত । করিলেন না। বাটীতে দুগ্ধ-ফেন-নিভা শয্যায় শুইয়াও যে আরাম পাই নাই, পাঠক বিস্মিত হইবেন না যে গো-ব্যানের সেই ললিত মধুর গ্ৰীতির দোলনির মধ্যে অপূর্ব শয্যায় শুইয়াও সে শান্তি অনুভব করিয়াছিল্লাম :) । ধীরে ফ্ল্যুই যাইবার জন্য অদৃশ্য হইতেছিল, বিহুগগণ নিজ নিজ কুশাষ্ট্রে’প্ৰীষ্ট্রি, দিগন্ত ছাপিয়া ঝঙ্কার দিতেছিল, তখন আমরা শারদের সেই সুন্দর নিৰ্ম্মলপ্ৰভাতে হাম্পিতে উপনীত হইলাম। – – হাম্পী মান্দ্রাজের বেল্লৱী জেলার অন্তৰ্গত। বেল্লরী হইতে ইহা ৩৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বেগশালিনী তুঙ্গভদ্রা নদী হাম্পির চরণধৌত করিয়া প্রবাহিত্য, ইহার দক্ষিণতীরে হাম্পি বিরাজিত। প্রাচীন নগরের ধ্বংসাবশিষ্ট ভূমিখণ্ডের পরিমাণ ৯বর্গ মাইল। এই স্থানেই- একদিন প্ৰাচীন সুপ্ৰসিদ্ধ বিজয়নগর রাজবংশের রাজধানী ছিল, কিন্তু কালের অচিন্তনীয় লীলাকৌশলে এখন তাহা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হইয়া একটা বৃহৎ গণ্ডগ্রামের আকার ধারণ করিয়াছে । যে স্থলে এক কালে রাজধানী বিজয়নগর ছিল, তাহা এখন বিজয়নগর নামে পরিচিত না হইয়া, উহার নিকটস্থ হাম্পি নামক গ্রামের নামে পরিচিত হইয়া_আসিতেছে। যে সমুদয় ধ্বংসাবশেষ এখনও বিদ্যমান আছে, তাহা দৃষ্টেই প্রাচীন সুমহান কীত্তি ও বৃহত্তের বিবরণ উপলব্ধি করা যায় । প্রাচীনকালে বিজয়নগরের পরিসর, সুপ্ৰশস্ত রাজপথ, অসংখ্য প্ৰাসাদ মন্দির ও মনোহর সৌধমালায় ইহা বিশ্বপৰ্য্যটকগণকে বিস্ময়-সাগরে নিমগ্ন করিয়াছিল। তখন এই নগর চতুর্দিকে প্রায় ২৪ মাইল পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত প্রাচীন বিজয় তা ছিল, এবং ইহার রক্ষার জন্য সীমান্ত ভাগ সমূহ অনেকগুলি নগরের কথা। প্রাচীর দ্বারা বেষ্টন করিয়া সুরক্ষিত ও দুর্ভেদ্য করা হইয়াছিল। এই নগরীর সমৃদ্ধি ও সৌন্দৰ্য্য দর্শনে মুগ্ধ হইয়া পাশ্চাত্য ভ্ৰমণকারী Edwards Barbessa G Caesar Frederic লিখিয়াছিলেন যে এইরূপ সুবৃহৎ ধনজন ও বাণিজ্য সমৃদ্ধিপূর্ণ মহানগরী পৃথিবীতেই অতি ৷ বিরল ছিল । ।