পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৮৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9ta-use (পুস্করিণী) উহার চারিতীরে গ্রেনাইট প্রস্তরে বাঁধান। এখানে প্রতি বৎসর রথোৎসব হইয়া থাকে। এক স্থানে একটী ৪১৷০ ফিট লম্বা এবং চারি ফিট চওড়া কতকগুলি প্রস্তর খণ্ড প্রাচীর ও গৃহের দেওয়ালে সংলগ্ন দেখিতে পাওয়া যায়, তৎকালে এই গুলির দ্বারা যে কি উদ্দেশ্য সাধিত হইত। তাহা এখন অনুমান করা সুকঠিন । রাজপ্রাসাদের কিছু দূরে তুঙ্গভদ্রার তটে একটী বিষ্ণু-মন্দির আছে, উহা এখনও নষ্ট হয় নাই, ইহার মধ্যে কতকগুলি স্তম্ভ আছে। প্ৰত্যেকটি স্তম্ভই নানাবিধ কারুকাৰ্য্য পরিশোভিত । একটী মন্দিরে রামায়ণের ঘটনাবলীর চিত্র দর্শন করিলাম। তুঙ্গভদ্রার অপর তটে ঋষ্য-মুখ পর্বত। এপার হইতে হরিৎলতা পল্লব-সমাচ্ছন্ন, নানাজাতিয় তরুরাজি পরিশোভিত গিরিশ্ৰেণী বড়ই মনোরম দেখায়। রামস্বামীর মন্দির হইতে প্ৰায় অৰ্দ্ধ মাইল দূরে তুঙ্গভদ্রার তীরে সুপ্ৰসিদ্ধ বিটঠল রাওয়ের মন্দির অবস্থিত ; এ মন্দিরের কথা আমরা পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি। তালিকোটার যুদ্ধাবসানে মুসলমানগণ বিজয়নগর ধ্বংস করিয়া যখন দেবালয় লুণ্ঠন করে, তখন তাহারা ধনপ্রাপ্তির আশায় মূল স্থান হইতে দেবমূৰ্ত্তি নিক্ষিপ্ত করিয়া মন্দিরের মেজ পৰ্যন্ত খনন করিয়াছিল। এখন আর বিটঠল দেবের শ্ৰীমূৰ্ত্তি পৰ্য্যাটকের দৃষ্টিপথে পতিত হয় না, জন-প্ৰবাদ এইরূপ যে মুসলমানের অত্যাচারের পর হইতেই তিনি অন্তহিত হইয়াছেন । বিজয়নগরের প্রাচীন সমৃদ্ধির সময়ের বিশাল-কীৰ্ত্তি প্ৰাচীন দুর্গটির ভগ্নাবশেষ এখনও বিদ্যমান, এই দুর্গের ভগ্নাবশেষের মধ্যেই রাজভবন, দেবালয়, হস্তীশালা, উষ্টশালা ইত্যাদি কঙ্কাল-দেহে বিরাজিত । লোক চলিয়া গেলে যেমন ক্ষীণ পথ পড়িয়া থাকে, তদ্রুপ এই বিশাল নগরীর ধ্বংসাবশেষের যে কীৰ্ত্তি সমুদয় জীৰ্ণদেহে বিদ্যমান, আমরা তাহদের মধ্য হইতেই প্ৰাচীনের গৌরব বৈভবময় ইতিহাস পাঠ করিয়া প্ৰাচীন ভারতের বীৰ্য্য ও তেজ, আচার ও পদ্ধতি, শিল্প ও স্থাপত্যের, বীরত্বের ও ধীরুত্বের মহিমময় পুরাবৃত্ত জ্ঞাত হইয়া বিস্ময়ে পুলকিত হই। এখনও হাম্পির স্থানে স্থানে প্রাচীন রাজগণের গৌরব প্রকাশক শিলালিপি সমূহ দেখিতে পাওয়া যায়। দক্ষিণাত্যের ও ভারতের প্রাচীন ইতিহাসে বিজয় নগর বিশেষ বিখ্যাত স্থান। আমরা পাঠকবর্গের অবগতির জন্য বিজয়