পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৯১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিষ্কিন্ধ্যা । উচ্চ শিলায় আরোহণ করিয়া আত্মরক্ষা করিয়াছিলাম। ময়ূরের ংখ্যা এ পর্বতে খুব বেশী, উহাদের কে-কা-রবে অস্থির হইতে হয়। ভানুদেব যখন পশ্চিম গগনে ঢলিয়া পড়িতেছিলেন, তাহার স্তিমিতলোহিত-রশ্মি যখন সন্ধ্যার আগমন সূচনা করিতেছিল, সে সময়ে আমরা দ্রুতপদে তুঙ্গভদ্রার তীরে আসিলাম। নৌকায় আরোহণ করিয়া একদল, মাতাল, পাহাড়িয়া স্ত্রী-পুরুষের যন্ত্রণায় অস্থির হইতে হইয়াছিল। ইহাদের মাতলামির দরুণ আরোহীদিগকে প্রাণভয়ে ভীত হইতে হইয়াছিল, সেই বিকট-চীৎকার, ও তাঁহাদের তাণ্ডব নৰ্ত্তনে ডোল ডুবিবার উপক্রম হইয়াছিল, ডোল চালক কিছুতেই ইহাদিগকে সুস্থির করিতে পারিতেছিল না, আমরা না বুঝি ভাষা, না বুঝি ভাব, কাজেই নীরবে পরিত্ৰাহি ডাক ডাকিয়া মনে মনে দুৰ্গানাম জপিতেছিলাম। এই মদমত্তগণের উৎপাতে তুঙ্গভদ্রার প্ৰবল স্রোতবেগে নিৰ্দ্ধারিত স্থান হইতে আমাদিগকে বহু দূরে সরিয়া গিয়া অবতরণ করিতে হইয়াছিল। আমরা যে তুঙ্গার প্রখর স্রোতে নিমজ্জিত হই নাই সেজন্য জগৎ পাতা জগদীশ্বরকে ধন্যবাদ প্ৰদান করিলাম । যখন তীরে অবতরণ করিলাম, তখন সন্ধ্যার ঘনীভূত অন্ধকার চতুৰ্দিক আবৃত করিয়া ফেলিয়াছিল, আকাশে হীরার মত কোটি কোটি তারা নীল চন্দ্ৰাতপে জুলিতেছিল ।